চট্টগ্রাম ব্যুরো

প্রকাশিত: ৫ মে, ২০২৪, ০৭:৫৩ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

তৈলারদ্বীপ সেতুর টোল প্রত্যাহারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বাঁশখালীর সীমানায় সাঙ্গু নদীর উপর নির্মিত তৈলারদ্বীপ সেতুর টোল প্রত্যাহারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ছাত্র সংগঠন বাঁশখালী স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন।

গতকাল রবিবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অবিলম্বে সেতুটির টোল প্রত্যাহারের দাবি জানান সংগঠনের নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ এবং সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ওকান উদ্দীন সাকিব।

বক্তব্যে আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, বাঁশখালীর মাঝ বরাবর বয়ে চলা একমাত্র প্রধান সড়ক পিএবি সড়ক নামে পরিচিত। যা কর্ণফুলী টানেল হয়ে পটিয়া, আনোয়ারা ও বাঁশখালী হয়ে পেকুয়া কক্সবাজারের সাথে মিলিত হয়েছে। কণর্ফুলী টানেল হয়ে কক্সবাজার যাওয়ার জন্য এ রাস্তা ব্যবহারে দুরত্ব এবং সময় অনেকটা কমিয়ে দেয়। কিন্তু পরিতাপের বিষয় এই যে, এ সড়কের প্রবেশ পথে সাঙ্গু নদীর উপর নির্মিত তৈলারদ্বীপ সেতুতে অনিয়ন্ত্রিত টোল আদায় বাঁশখালী তথা এ সড়ক ব্যবহারকারীদের জন্য দূর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তিনি বলেন, বাঁশখালী সাঙ্গু নদীর উপর সম্পূর্ণ দেশীয় অর্থায়নে নির্মিত হয়েছে তৈলারদ্বীপ সেতু। ২০০১ সালের ১৭ জানুয়ারী এই সেতুর নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রায় ৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে এ সেতু নির্মাণ করা হয়। উদ্বোধনের পর ২০০৭সাল থেকে দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে টোল আদায় করা হচ্ছে। ৩ বছরের ইজারা দিয়েই যেখানে নির্মাণ ব্যয় উঠে যায়, সেখানে দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে টোল আদায় সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও জনগণের অধিকারের পরিপন্থি।

‘বাংলাদেশ গ্যাজেট ২৬ জুন’ ২০১৪ এর সংশোধিত প্রজ্ঞাপন, টোল নীতিমালা অনুযায়ী, ভৌগোলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ও অনুন্নত আর্থসামাজিক অবস্থা বিবেচনার প্রেক্ষিতে টোল মওকুফের বিধান থাকলেও এই সেতুর ক্ষেত্রে তা সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। একটি সেতুতে টোল আদায় করা হয়, সেতুর নির্মাণ ব্যয় এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য। সেই বিবেচনায় দেখা যায়, তৈলারদ্বীপ সেতুর নির্মাণ ব্যয় ৩২ কোটি টাকা। কিন্তু প্রতি ৩ বছরে এ সেতু থেকে টোল আদায় হয় ৩০-৩৫ কোটি টাকা। অথচ সেতু নির্মাণের পর থেকে কোনো ধরনের দৃশ্যমান মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ চোখে পড়েনি।

‘সাঙ্গু নদীর উপর আরো ৬টি সেতু রয়েছে যা তৈলারদ্বীপ অপেক্ষা অনেক বড়। কিন্তু বাকি ৫টি সেতু টোলমুক্ত হলেও একমাত্র তৈলারদ্বীপ সেতুতে টোল দিতে হয় যা বাঁশখালীর মানুষের সাথে চরম বৈষম্যমূলক আচরণ। তৈলারদ্বীপ সেতুতে শাহ আমানত সেতুর সমপরিমাণ কিংবা তার চেয়েও বেশি টোল দিতে হয়। চট্টগ্রাম শহর হতে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত।একই হারে দুটি সেতুতে টোলের কারণে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে দর্শনার্থীরা বরাবরের মতোই নিরুৎসাহিত হচ্ছে। সেতুর টোলের কারণে কৃষকরা ন্যায মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।


বাংলাদেশ টোল নীতিমালা ২০১৪ এ টোল প্লাজার কথা উল্লেখ রয়েছে। টোল আদায়ের জন্য টোল স্থাপনা সরঞ্জামাদি, সফটওয়্যার আইটি যন্ত্রপাতি ইত্যাদির কথা উল্লেখ থাকলেও তৈলারদ্বীপ সেতুতে তা অনুপস্থিত। রাস্তায় দাঁড়িয়ে হাতের ইশারায় গাড়ি দাড় করিয়ে টোল আদায় করা হয়। এই অপেশাদার আচারণের কারণে দীর্ঘ যানজট লেগে থাকে। যানজটের কারণে বিভিন্ন সময়ে এই স্থানে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটেছে।


এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বাঁশখালীর আপামর জনসাধারণের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে তৈলারদ্বীপ সেতুর এই অন্যায্য ও বৈষম্যমূলক টোল প্রত্যাহারের বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।

মন্তব্য করুন