রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১ জুলাই, ২০২৪, ০৮:২৪ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

নতুন শিক্ষাক্রমের পরীক্ষা মূল্যায়ন পদ্ধতি চূড়ান্ত, যা থাকছে

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা চলছে নতুন শিক্ষাক্রমে নিয়ে। শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন কিভাবে হবে তা নিয়ে আলোচনা চলছিল । অবশেষে মূল্যায়ন পদ্ধতির খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটি (এনসিসিসি)।
আজ সোমবার (১ জুলাই) দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এনসিসিসি’র এক বৈঠকে এটি চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

এর আগে গত মে মাসে সচিবালয়ে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা ও প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়। সেটিই আজ চূড়ান্ত হয়েছে।

ছোটোখাটো কিছু সংশোধনী সহ মূল্যায়ন পদ্ধতি চূড়ান্ত হয়েছে। যেভাবে প্রস্তাব করেছিলেন, আগে যা যা ছিল, সেভাবেই থাকছে বলে জানিয়েছেন, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান। তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে ৬৫ শতাংশ লিখিত এবং ৩৫ শতাংশ কার্যক্রমভিত্তিক থাকছে। আজকের সভায় প্রস্তাবিত কাঠামো, নতুন শিক্ষাক্রম অনুসারে পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

চূড়ান্ত অনুমোদনের ফলে নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার সামষ্টিক মূল্যায়নের লিখিত অংশের ওয়েটেজ হচ্ছে ৬৫ শতাংশ। আর কার্যক্রমভিত্তিক অংশের ওয়েটেজ হচ্ছে ৩৫ শতাংশ।
মূল্যায়নের ক্ষেত্রে কার্যক্রম বলতে বোঝানো হচ্ছে অ্যাসাইনমেন্ট করা, উপস্থাপন, অনুসন্ধান, প্রদর্শন, সমস্যার সমাধান করা, পরিকল্পনা প্রণয়ন ইত্যাদি। আরও সহজ করে বললে হাতে-কলমে কাজ।

তারও আগে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন ও মূল্যায়নপদ্ধতি চূড়ান্তকরণের কার্যক্রম সমন্বয়ের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠিত কমিটি কার্যক্রমভিত্তিক অর্থাৎ হাতে-কলমে মূল্যায়নের ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ আর লিখিত অংশের ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ করার চূড়ান্ত সুপারিশ করেছিল। এরপর তা থেকে সামান্য কিছু পরিবর্তন এনে লিখিত অংশের ওয়েটেজ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়।

চূড়ান্ত হওয়া মূল্যায়ন পদ্ধতিতে এসএসসিতে কেউ দুই বিষয়ে ফেল করলেও এইচএসসিতে ভর্তি হতে পারবে। কিন্তু তারা পূর্ণ সনদ পাবে না। তবে মার্কশিট পাবে। তবে পূর্ণ সনদ পেতে পরে দুই বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে পাশ করতে হবে। তবে বিষয়টি ভালোভাবে নেননি অনেক অভিভাবকরা। তারা বলছেন, কোনো শিক্ষার্থী যদি ফেল করে উপরের শ্রেণিতে ওঠার সুযোগ পায়, সে পড়াশোনায় মনোযোগী হবে না।

গত বছর দেশে নতুন শিক্ষাক্রম চালু করা হয়। এতে প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তমসহ মোট তিন শ্রেণিতে নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়ন করা হয়। চলতি বছর বাস্তবায়ন করা হচ্ছে দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবমসহ চারটি শ্রেণিতে। ২০২৫ সালে পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে, ২০২৬ সালে একাদশ এবং ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণিতে এ শিক্ষাক্রম ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে।

সাত ধাপে মূল্যায়ন

বিষয়ভিত্তিক মূল্যায়নের ক্ষেত্রে সাতটি ধাপের (স্কেলের) কথা বলা হয়েছে। এগুলো হলো—প্রারম্ভিক, বিকাশমান, অনুসন্ধানী, সক্রিয়, অগ্রগামী, অর্জনমুখী ও অনন্য। শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করে কোন শিক্ষার্থী কোন পর্যায়ে আছে—তা নির্ধারণ করতে এই সাতটি ধাপ রাখা হয়েছে।
ওই কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী লিখিত ও কার্যক্রমভিত্তিক মূল্যায়ন মিলিয়ে সময়টি পাঁচ ঘণ্টা রাখা হয়েছে। নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী দশম শ্রেণি শেষে যে পাবলিক পরীক্ষা হবে, সেটির নাম এখনকার মতো মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষা রাখা হয়েছে। এ পরীক্ষা হবে শিক্ষা বোর্ডগুলোর অধীনে।

জানা যায়, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মূল্যায়ন পদ্ধতির খসড়া প্রণয়ন করে এনসিটিবি। সেটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়েও উপস্থাপন করা হয়। পরে শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন ও মূল্যায়ন পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে নতুন কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
উল্লেখ্য, এনসিসিসি মন্ত্রণালয় পর্যায়ের একটি কমিটি, যেখানে শিক্ষাক্রমের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।

 

মন্তব্য করুন