ফেনী প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৬ মে, ২০২৪, ১১:০৫ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

ফেনীতে কালবৈশাখী ঝড়, ফল-ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ফেনীর প্রায় সবকটি উপজেলায় সোমবার দুপুরে আকস্মিক কালবৈশাখী ঝড় হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে জেলার ফেনী নদী তীরবর্তী উপজেলা সোনাগাজী ও দাগনভূঞায়। কালবৈশাখী ঝড়ে অনেক গ্রাম ও কাঁচা ঘরবাড়ি লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। উপড়ে পড়েছে অনেক গাছ ও গাছের ডাল। গাছের ডালে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিদ্যুত ও ইন্টারনেটের তার। ১ ঘণ্টা যানচলাচল বন্ধ ছিল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনে।

সোমবার (৬ মে) দুপুর সোয়া ১টার দিকে ঝড় শুরু হয়ে দুপুর আড়াইটার সময় শেষ হলেও সারাদিনই টিপটিপ বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত অব্যাহত রয়েছে।

ঝড়ের পর থেকে এই রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত দুই উপজেলার সর্বত্রই বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগ  বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ঝড়ের ফলে আম, কাঁঠাল, লিচু, জাম্বুরাসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া পাকা বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, দুই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ঝড়ের কারণে গাছপালা ভেঙে রাস্তায় পড়েছে। 

দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর বিসিক সংলগ্ন এলাকায় ও মহিপাল হাইওয়ে থানার সামনে কালবৈশাখীর ঝড়ো হাওয়ায় গাছ উপড়ে মহাসড়কের ওপর পড়েছে। এতে মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনে ১ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল। মহাসড়কের চট্টগ্রাম লেনে আনুমানিক পাঁচ কিলোমিটার জুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ও ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা গাছ অপসারণের পর আড়াইটার দিকে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।

জেলা আবহাওয়া অফিস জানায়, দুপুর দেড়টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ফেনীতে ১০৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ।

ঝড়ে কয়েক হাজার হেক্টর জমির পাকা ধান, আম, কাঁঠাল ও লিচুসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফল ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

সোনাগাজী উপজেলার চরমজলিশপুর গ্রামের মহি উদ্দিন রুবেল জানান, দুপুর সোয়া ১টার দিকে হঠাৎ আকাশ গাঢ় কালো হয়ে প্রচণ্ড বাতাস ও বজ্রসহ বৃষ্টি শুরু হয়। এসময় প্রচণ্ড বজ্রপাতের কারণে কেউ ঘর থেকে বের হতে পারেনি। 

সোনাগাজীর চরচান্দিয়া গ্রামের কৃষক নজির আহমদ নজু মিয়া জানান, আমার ১২ ঘণ্ডার পাকা ধান জমিনে লেপ্টে গেছে। ঝড়-বৃষ্টি টানা লেগে থাকলে খুবই বিপদে পড়ে যাবো।

সোনাগাজীর স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আমিরাবাদ যুব সংঘের সাধারণ সম্পাদক নয়ন মজুমদার বলেন,  কালবৈশাখী ঝড়ে অনেক কাঁচা ঘরবাড়ির টিনের চালা উড়িয়ে নিয়ে গেছে। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে গাছ ভেঙে পড়েছে।

দাগনভূঞা উপজেলার বেকের বাজারের ব্যবসায়ী মো: সবুজ জানান, ঝড়ে বাজারের দক্ষিণে একটি বড় গাছ ভেঙে বিদ্যুতের তারের ওপর পড়ে আছে।

দাগনভূঞা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো: জাহাঙ্গীর আলম জানান, কালবৈশাখীর তাণ্ডবে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের বড় বড় খুঁটি ভেঙে পড়ে। এছাড়া গাছের ডাল পড়ে তার ছিড়ে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। আমাদের কর্মীরা মেরামতের কাজ করছে। তবে কখন তা স্বাভাবিক হবে এখনি বলা যাচ্ছে না।

দাগনভূঞা উপজেলা কৃষি অফিসার মো: মহি উদ্দিন মজুমদার জানান, ঝড়ে আম, লিচুসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফল ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তাৎক্ষণিক ফসলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা যায়নি। তবে কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীরা ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয়ে কাজ করবেন।

মন্তব্য করুন