ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৩ মে, ২০২৪, ০৩:৩৯ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

বীরাঙ্গনা জয়গুন নেছার পানি বিল ১৭ লাখ টাকা

বীরাঙ্গনা জয়গুন নেছা। ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাশবিক নির্যাতন করা হয় এতেই ক্ষ্যান্ত হন নাই পাকবাহিনী, তার যুবতী কন্যা ও স্বামীকে হানাদার বাহিনী তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে। ২০১৯ সালে তাকে বীরঙ্গনার খেতাব দিয়ে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করা হয়।

বলছিলাম ঝিনাইদহ শহরের কলাবাগান এলাকার শহীদ গোলাম নবী সড়কের হাবিবুর রহমানের স্ত্রী জয়গুন নেছার কথা। বয়স্ক এই বীরাঙ্গনার পানির বিল এসেছে ১৭ লাখ ১২ হাজার ৮৬৬ টাকা। বিপুল পরিমান পানির বিল নিয়ে চোখে মুখে শর্ষের ফুল দেখছেন জয়গুন নেছা। যে কেউ দেখলেই চমকে উঠবে। 

জানা যায়, তার বাড়িতে পয়েন্ট ৭৫ ব্যাসার্ধের পানি সরবরাহের লাইন রয়েছে। প্রতি মাসে তার বিল আসে ২৫০ টাকা। কতদিন আগে সে পানি সরবরাহের সংযোগ নিয়েছিলেন ঠিক স্মরণে নেই। তবে ১৫ বছর হবে বলে তিনি জানান। হিসাব অনুযায়ী ১৫ বছরে তার মোট বিল হয় ৪৫ হাজার টাকা।

ঝিনাইদহ পৌরসভার পানি সরবরাহ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জয়গুন নেছার মূল পানির বিল ৩০ হাজার ১২০ টাকা। বাকী টাকা চক্রবৃদ্ধি হারে যে সুদ হয় সেটা বিলের সঙ্গে যোগ হয়ে এই বিপুল অংক দাঁড়িয়েছে।

ঝিনাইদহ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী কামাল উদ্দীন বলেন, ২০১৭ সালে এটুআই প্রজেক্টর সফটওয়ারের আওতায় বিল প্রস্তুত করা হয়। সেখানে যেভাবে সফটওয়ার তৈরী হয়েছে তাতে জয়গুন নেছার মূল বিলের সঙ্গে প্রতি মাসে ৮১ হাজার ৫৫৩ টাকার সুদ যোগ হচ্ছে। বছর বছর সেটা আবার চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়ছে। তিনি বলেন, এটা পৌরসভার কোন ভুল নয়, বরং সফটওয়ারে চক্রবৃদ্ধি হারে যে সুদ হচ্ছে সেটাই তার পানির বিলে যোগ হচ্ছে।

 এই কর্মকর্তা আরো বলেন, জয়গুন নেছা ২০১৪ সাল থেকে পানির বিল দেন না। তিনি যদি সুদ ও আসল মওকুফের আবেদন করেন তবে তা ভেবে দেখা হবে।

বয়সের ভারে ন্যুয়ে পড়া বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়গুন নেছা জানান, সরকার প্রতি মাসে যে ভাতা দেন তার মধ্যে থেকে ঋন বাবদ ১৪ হাজার টাকা কেটে নেয়। প্রতি মাসে তিনি পান মাত্র ৬ হাজার টাকা। এই অল্প টাকা দিয়ে এই বিপুল পরিমান পানির বিল পরিশোধ করার সাধ্য তার নেই।

মন্তব্য করুন