রেজাউল করিম, রংপুর

প্রকাশিত: ১৭ মে, ২০২৪, ০৪:২৭ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

রংপুরে সিএনজি চালুর দাবিতে শ্রমিকদের মানবন্ধন

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

উত্তরের চিকিৎসার রাজধানী খ্যাত রংপুরে প্রতিদিন স্বাস্থ্য-সেবা নিতে আসে আশপাশের জেলার লাখো মানুষ। আশেপাশের জেলার হতদরিদ্র মানুষগুলো কম টাকায় অটো কিংবা সিএনজি যোগে রংপুরে আসে। এতে সময়ের সাথে ভোগান্তি কম পোহাতে হয় তাদের । হঠাৎ সিএনজি বন্ধে একদিকে চালক ও তার পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে । অন্যদিকে সাধারণ মানুষের যাতায়াতে ভোগান্তি বেড়েছে কয়েকগুন।

মানবেতর জীবনযাপন করা চালকরা গাড়ি চলাচলের দাবিতে শুক্রবার সকাল ১১ টায় রংপুর প্রেসক্লাব চত্বরে মানববন্ধন করেন। রংপুরের বিভিন্ন রুটে চলাচলকারি সিএনজি চলতি মাসের ৮ তারিখ থেকে চলাচল বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। এতে দুভোর্গে পড়েছে সাধারন মানুষ। গাড়ি চালাতে না পেরে সংসারও চলছে না চালকদের। ধারদেনা করে সিএনজি কেনা চালকরা পড়েছেন চরম বিপাকে। তাই অবিলম্বে গাড়ি চালানোর অনুমতির দাবিতে মানববন্ধন করেন চালকরা।

এদিকে শেখ হাসিনা দ্বিতীয় তিস্তা সেতু (মহিপুর সেতু) চালু হওয়ার পর স্বস্তি নেমে আসে লালমনিরহাটের চার উপজেলার মানুষের। আঞ্চলিক সড়ক হওয়ায় বাস চলাচল করে না এই সড়কে।  সহজেই রংপুর যাতায়াতের একমাত্র ভরসা তিন-চাকার বাহন সিএনজি।  দীর্ঘদিন ধরে এই সড়কে সিএনজিতে চলাচল করে লালমনিরহাটের চার উপজেলার মানুষ।  

দীর্ঘদিন চললেও অদৃশ্য কারণে কাকিনা-মহিপুর সড়কে হঠাৎ বন্ধ রয়েছে সিএনজি চলাচল। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে যাত্রীরা। অন্যদিকে পরিবার নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় দিন পার করছে শতাধিক সিএনজি চালক। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্থানীয় একটি সংঘবদ্ধ চক্র নগরীর সাতমাথা, দর্শনা, ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মোড়ে সিএনজি স্ট্যান্ডে চাদাঁর দাবি করে। চাঁদা দিতে সিএনজি চালকরা অস্বীকার করলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে সিএনজি স্ট্যান্ড কেন্দ্রীক মাসে অর্ধকোটি টাকা চাঁদা আদায় হয় এমন শিরোনামে একটি ভিডিও ক্লিপ আপলোড করা হয়। ভিডিও ক্লিপটি দেখে প্রশাসন নড়েচড়ে বসে । নিষেধাজ্ঞা দেয় সিএনজি চলাচলের উপর । এতে দুই সপ্তাহ থেকে চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে চালক ও তার পরিবারগুলো ।

মানববন্ধনে চালকরা জানান, চাঁদা ও মাসিক মাশোয়ারার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বিভ্রান্তকর তথ্য সম্প্রচার করায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে চাপে পড়ে গাড়ি চালানো বন্ধ করে দেয় চালকরা। এতে  শ্রমিকরা মানবেতর জীবন যাপন করছে। তবে,সিএনজি ও অটো শ্রমিকরা,স্বাভাবিক কর্মজীবনে ফিরতে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের সহযোগিতা প্রার্থনা করেছে।

এদিকে যাত্রীরা বলছেন, সিএনজি বন্ধ হওয়ায় ইজিবাইকে যেতে সময় লাগে দ্বিগুণ। ডাক্তার দেখাতে এসে রাত হয়ে যাওয়ায় গাড়ি না থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের।  সিএনজিতে কম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে পারে এবং নিয়মিত অনেকেই রংপুর এসে নিজ কর্মস্থলে কাজ শেষে বাড়ি ফিরতে পারে বলে দাবী যাত্রীদের। 

চালকদের দাবী, তারা দীর্ঘদিন ধরে যেভাবে গাড়ি চালিয়ে আসছে তা যেন বন্ধ না হয়। এই সড়কে সিএনজি চলাচল বন্ধ হলে শতাধিক পরিবারকে না খেয়ে থাকতে হবে এবং তাদের সন্তানদের লেখাপড়া বন্ধ হবে।আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে পুলিশের হয়রানি বন্ধসহ যান চলাচল স্বাভাবিক না করা হলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারী দিয়েছেন রংপুর মেট্রোপলিটন সিএনজি অটো মালিক ও শ্রমিক পরিবহন ফেডারেশনের শীর্ষনেতারা।

শতাধিক সিএনজি চালকের পরিবার ও হাজারো যাত্রীদের সুবিধার্থে প্রশাসন সহায়ক ভূমিকা রাখবেন এমনটাই প্রত্যাশা চালক ও যাত্রীদের। এ ব্যাপারে মেট্রোপলিটন ট্রাফিকের ডিসি মেনহাজুল ইসলাম বলেন, নানা পারিপাশ্বিক কারনে সিএনজি বন্ধ করা হয়েছে। কমিশনার স্যারের সাথে কথা বলে দ্রুতই বিষয়টি সমাধা করা হবে।

মন্তব্য করুন