জাকির হোসেন, সুনামগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪, ০৩:৫৮ এ এম

অনলাইন সংস্করণ

শিমুল বাগান দেখতে আসছেন পর্যটকরা; আছে নানা সীমাবদ্ধতা

ফাল্গুন আসার আগেই সুনামগঞ্জের শিমুল বাগানে টকটকে লাল শিমুল ফুলের রক্তিম আভায় পরিনত হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্থ থেকে আসতে শুরু করেছে পর্যটকরা। 

এক পাশে শিমুল বাগান। ওপারে ভারতের মেঘালয়ের পাহাড়। মাঝে চোখজুড়ানো মায়াবী যাদুকাটা নদী। সব মিলেমিশে অপরূপ রূপে সেজেছে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার মানিগাঁও গ্রাম সংলগ্ন এই জয়নাল আবেদীন শিমুল বাগান। সেই সৌন্দর্য উপভোগ করতে দল বেঁধে ছুটে আসছে হাজারো পর্যটক ও দর্শনার্থী।

কিন্তু হাজারো পর্যটক আসলেও এই বাগানে কোন ধরনের অবকাঠামোগত সুযোগ সুবিধা নেই। নেই স্যানিটেশন ব্যবস্থা। ফলে দুর দুরান্ত আসা নারী পর্যটকরা পড়েন চরম বিরম্ভনায়।

২০০২ সালে বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন নিজের প্রায় ২ হাজার ৪০০ শতক জমিতে শিমুল গাছ রোপণের উদ্যোগ নেন। তিনি প্রায় তিন হাজার শিমুল গাছ রোপণ করেন। দিনে দিনে বেড়ে ওঠা শিমুল গাছগুলো এখন হয়ে উঠেছে শিমুল বাগান। যাদুকাটা নদীর তীরে ঘেঁষে গড়ে ওঠা এই শিমুল বাগানই দেশের সবচেয়ে বড় শিমুল বাগান।

ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই পুরো এলাকাজুড়ে টকটকে লাল শিমুল ফুল দেখা যায়। পুরো এলাকায় যেন রক্তিম আভা। ওপারে ভারতের মেঘালয় পাহাড়, মাঝে যাদুকাটা নদী, এপারে শিমুল বাগান। সব মিলেমিশে গড়ে তুলেছে প্রকৃতির এক অনবদ্য কাব্য। লাল পাপড়ি মেলে থাকা রক্তিম আভায় যেন পর্যটকদের মনে আলাদা জায়গা করে নিয়েছে। ফাল্গুন আসার সাথে সাথে এখানে দেশ-বিদেশ থেকে আসতে শুরু করেছেন পর্যটকরা। সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের মানিগাঁও এলাকার শিমুল বাগানটি ঘুরে দেখা যায়, বাগানটি এখন ফুলে ফুলে লাল হয়ে আছে। সাথে রয়েছে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়।

বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেশ-বিদেশের নানা প্রান্থ থেকে আসেন পর্যটকরা। এতোসব সুন্দর্যর মাঝে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে বাগানে বা আশপাশে নেই কোন ধরনের স্যানিটেশন ব্যবস্থা। ফলে দেশের বিভিন্ন প্রান্থ থেকে আসা পর্যটকরা বিশেষ করে নারী পর্যটকরা পরতে হয় চরম বিরম্ভনায়। এছাড়াও জেলার তাহিরপুর উপজেলায় শিমুল বাগান ছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন পর্যটন এলাকা। যেসব এলাকায় পৌছাতে সড়ক যোগাযোগের ব্যবস্থা খুবই নাজুক। শিমুল বাগানের সুন্দর্য উপভোগ করতে সপ্তাহের ছুটির দিনগুলোতে ভিড় করেন হাজারো পর্যটক।

হবিগঞ্জ থেকে সপরিবারে আসা পর্যটক তাছলিমা আক্তার জানান, যাতায়াত ব্যবস্থা খারাপ হওয়ায় আসতে কষ্ট হয়েছে। তবে সব কষ্ট দূর হয়ে গেছে শিমুল বাগানের সৌন্দর্য দেখে।

একই পরিবারের সদস্য হুসনা বেগম বলেন, এত সুন্দর একটা জায়গা। বারবার আসতে চাইলেও অবকাঠামোগত সুবিধা না থাকার কারণে অনেকেই নিরুৎসাহিত হবে।


বাগানের ভেতর অধিক জায়গা থাকা সত্বেও নেই কোন স্যানিটেশন ব্যবস্থা ফলে নারী পর্যটকরা পরতে হয় চরম বিরম্ভনায়।

নেত্রকোনা থেকে আসা সাদিয়া আক্তার বললেন,বাগানের ভেতর না শুধু এর আশে পাশেও কোন ধরনের স্যানিটেশন ব্যবস্থা নাই। ফলে আমরা নারীদের জন্য অনেক সমস্যা। যদি স্যানিটেশন ব্যবস্থা করা যেতো তাহলে এলাকাটি আরো বেশি সমৃদ্ধ হতো।

বাগান রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা জয়নাল আবেদীনের ছেলে রাখাব উদ্দিন জানালেন, বাগান নিয়ে নানা পরিকল্পনার কথা। তাঁদের পরিবারের নিজস্ব অর্থায়নে পর্যটকদের সুবিধার জন্য কাজ করছেন বলে জানান তিনি। এছাড়াও সম্প্রতি স্যানিটেশন এর কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।

অন্যদিকে সড়ক পর্যটন এলাকার সড়ক যোগাযোগের জন্য কাজ শুরু করার কথা জানালেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর।

সুনামগঞ্জ এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুব আলম বলেন, সুনামগঞ্জে তাহিরপুর উপজেলা পর্যটন স্পটগুলোতে সহজে পর্যটকরা যাতে ঘুরতে পারে সেজন্য সড়ক মেরামতের কাজ শীঘ্রই শুরু হবে।

 

মন্তব্য করুন