নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৫ জানুয়ারী, ২০২৪, ১২:৪৯ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

শীতের মাঝেই বৃষ্টি কবে হবে জানালো আবহাওয়া অফিস

দেশের বিভিন্ন জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে আছে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশ। বেড়েছে শীতের তীব্রতাও। যেসব জেলায় শৈত্যপ্রবাহ নেই, সেখানেও অনুভূত হচ্ছে তীব্র শীত। অনেক জায়গায় বেশ কয়েকদিন ধরে দেখা মিলছে না সূর্যেরও। তীব্র ঠান্ডায় কঠিন হয়ে গেছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।

উত্তরের হিমেল বাতাসে রাজধানীসহ সারা দেশের মানুষই এখন শীতে কাবু। তিন দিন ধরে এ অবস্থা হওয়ায় অনেকেই ভাবছেন সামনে শীতের তীব্রতা কমে আসবে। তবে তাদের জন্য কিছুটা দুঃসংবাদ দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে বরিশালে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এদিকে, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, ভোলা, বরিশাল ও দিনাজপুর জেলার ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে চলছে। প্রকৃতির এমন বৈরী রুপ আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। সেই সাথে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়বে।

তবে আবহাওয়া অফিস বলছে, আগামী ১৭ ও ১৮ই জানুয়ারি দেশের অনেক স্থানে হালকা বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সাথে ২০শে জানুয়ারির পর তাপমাত্রা আবারও কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ভারী কুয়াশার কারণে সূর্যের আলো ভূপৃষ্ঠ পর্যন্ত পৌঁছতে পারছে না। যে কারণে মাটি ও ভবন রাত-দিন ঠান্ডাই থাকছে। ফলে অনুভূত হচ্ছে তীব্র শীত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে কুয়াশার পুরুত্ব বাড়ছে এবং তা সরছে না। গবেষকদের মতে, গাছপালা ও জলাশয় কমে যাওয়াতেও ঠান্ডা বেশি লাগছে।

দেশের গড় তাপমাত্রা বিবেচনায় বছরের সবচেয়ে শীতলতম মাস জানুয়ারি, এর পরেই ডিসেম্বর। তবে এবার ডিসেম্বরে দেশের সব এলাকায় শীতের তীব্রতা ছিল না। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকায় শীতের অনুভূতি ছিল তুলনামূলকভাবে কম। জানুয়ারির প্রথম দিকে কিছুটা কম থাকলেও ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করেছে শীতের তীব্রতা। মাসের বাকি অর্ধেকটা সময় শীতের তীব্রতা খুব বেশি কমে আসার সম্ভাবনা নেই।

রাজধানী ঢাকায় গত চারদিন ধরে দিনে দেড়-দুই ঘণ্টার বেশি রোদ থাকছে না। অন্যদিকে, দেশের উত্তরাঞ্চলের অনেক এলাকায় সারাদিনে একবারও ঠিকমতো সূর্যের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। তিন দিন ধরে পরিস্থিতি এমন, যেন ঘন কুয়াশার চাদর ঘিরে রেখেছে আশপাশ। শীতের কষ্ট থেকে রক্ষা পেতে উত্তরাঞ্চলের অনেক এলাকার মানুষ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সন্ধ্যার পর বাইরে কমই বের হচ্ছেন।

আবহাওয়া অফিস বলছে, তীব্র শীতের সঙ্গে দেশের বেশিরভাগ এলাকায় রাতে ও ভোরের দিকে কুয়াশার দাপট অব্যাহত থাকবে। দমকা হাওয়া বা বৃষ্টি না নামলে ঘন কুয়াশা সরবে না। আর কুয়াশা না সরলে রোদ এসে শীতের দাপট কমাতে পারবে না।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, আগামী বৃহস্পতিবার থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে আকাশে মেঘ জমতে পারে। অনেক জায়গায় শুরু হতে পারে বৃষ্টি। বৃষ্টি চলতে পারে দু-তিন দিন। এরপর শীতের তীব্রতা কিছুটা কমতে পারে। তবে বৃষ্টি চলে যাওয়ার পর দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কিছুটা বাড়বে। তখন দিনে শীতের অনুভূতি কিছুটা কমে আসবে। তবে রাতে শীতের তীব্রতা এখনকার মতোই থাকতে পারে।

সারাদেশে কুয়াশার দাপট বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে গত ডিসেম্বর মাসজুড়ে থাকা বাড়তি তাপমাত্রাকে দায়ী করছেন আবহাওয়াবিদেরা। ডিসেম্বর মাসে দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বেশি ছিল। জানুয়ারিতে এসে তাপমাত্রা হঠাৎ ৪-৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে গেছে। আর হঠাৎ তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় প্রচুর কুয়াশা তৈরি হয়েছে। এতে কুয়াশার কারণে সূর্যের আলো ভূমিতে কম আসতে পারায় শীতের অনুভূতি বেশি হচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশের চার জেলা- রাজশাহী, পঞ্চগড়, চুয়াডাঙ্গা ও দিনাজপুরে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল দিনাজপুরে- ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর রাজধানীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

দিনাজপুরে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। উত্তর দিক থেকে বয়ে আসা হিম শীতল বাতাস ও ঘন কুয়াশার কারণে দিন দিন ওঠা-নামা করছে তাপমাত্রা। আর তাপমাত্রা ওঠা-নামার কারণে বাড়ছে শীতের তীব্রতা। ফলে বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষেরা।

দিনাজপুর আবহওয়া অফিসের তথ্য মতে সোমবার (১৫জানুয়ারি) দিনাজপুরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৬ ভাগ। চলতি বছরে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জেলার ওপর দিয়ে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। চলতি সপ্তাহে জেলায় স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভবনা আছে।

এদিকে, হিমেল বাতাস আর কনকনে ঠান্ডায় নাজেহাল জয়পুরহাটের মানুষ। এরই মধ্যে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ২ ডিগ্রিতে পৌঁছেছে। ফলে সাধারণ মানুষের কষ্ট আরও বেড়েছে।

সোমবার (১৫ জানুয়ারি) জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী কয়েকদিন তাপমাত্রার এই স্কেলে বড় কোনো পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা কম বলে জানিয়েছে নওগাঁর বদলগাছীর কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার।

এদিকে, ধারাবাহিক নিম্নমুখী তাপমাত্রায় কষ্টে দিনাতিপাত করছে জেলার কয়েক লাখ মানুষ। বিশেষ করে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের কষ্ট কয়েকগুণ বেশি। অনেক পরিবার শীতবস্ত্রের অভাবে ভোগান্তি পোহাচ্ছে। আগুন জ্বালিয়ে ঠান্ডা নিবারণের চেষ্টা করছেন অনেকে। খেটে খাওয়া, দিনমজুর শ্রেণির মানুষ জীবিকার তাগিদে ঠান্ডা উপেক্ষা করেই মাঠে কাজ করছেন। তবে তীব্র শীতে অনেকেই কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।

পঞ্চগড়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। সেই সঙ্গে গত ৭ দিন ধরে নিম্নমুখী তাপমাত্রা বিরাজ করছে জেলাজুড়ে। সোমবার (১৫ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে তেঁতুলিয়ার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র।

রোববার সকালে সূর্য দেখা গেলেও অনুভব হচ্ছে তীব্র শীত। কনকনে শীতের কারণে ঘরের বিছানা, মেঝে ও আসবাবপত্রও যেন বরফ হয়ে উঠছে। ফলে বিপাকে পড়েছে নিম্নআয়ের মানুষগুলো। হাটবাজারগুলোতে দোকানপাট দেরিতে খুলছে। আবার সন্ধ্যা-ভোরে বাড়ির উঠোনে খড়কুটোর আগুনে শীত নিবারণ করতে দেখা গেছে প্রান্তিক জনপদের মানুষগুলোকে। মাঝখানে কদিন তাপমাত্রা বাড়ার পর হঠাৎ করে আবারও তাপমাত্রা এক অঙ্কের ঘরে চলে আসায় শীতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে দেশের সীমান্তঘেঁষা এই জেলার প্রান্তিক জনপদ।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান, হঠাৎ করেই তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা নেমে এসেছে এক অঙ্কের ঘরে। রোববার সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই সপ্তাহের মধ্যে তাপমাত্রা এর থেকে আরও নিচে নামতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

নীলফামারীতে হিমেল হাওয়ার সঙ্গে জেঁকে বসা শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। শীতের দাপটে বেশ কাবু হয়ে পড়েছেন দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষেরা। টানা ৮ দিন ধরে নীলফামারীতে সূর্যের দেখা নেই। ঘন কুয়াশায় ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল ও স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। সেই সঙ্গে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে হাসপাতালে।

সোমবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে নীলফামারীর সৈয়দপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সপ্তাহ ধরে জেলার তাপমাত্রা ৯ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। দিনের অধিকাংশ সময় আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় সূর্য উত্তাপ ছড়াতে না পারায় বেড়েছে শীতের তীব্রতা।

আবারও মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কবলে উত্তরের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ। গত কয়েক দিন ধরে ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাসের দাপটে শীতে বিপর্যস্ত এ জেলা। সূর্যটাও দেরি করে উঠছে। আর উঠলেও আলোতে যেন কোনো তেজ নেই। এর ফলে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে এই জনপদের মানুষ।

সোমবার (১৫ জানুয়ারি) চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক আব্দুস সালাম। এর আগে গতকাল রোববার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

কুড়িগ্রামে কনকনে ঠান্ডা ও ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে গোটা জনপদ। ব্যাহত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। তীব্র ঠান্ডায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী ও খেটে খাওয়া মানুষ। সোমবার (১৫ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

ঠান্ডায় সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ১৬টি নদ-নদী তীরবর্তী চার শতাধিক চর ও দ্বীপ চরের মানুষ। কনকনে ঠান্ডায় শীত নিবারণের জন্য তারা খড়কুটো জ্বালিয়ে উষ্ণতা নিচ্ছেন। এ ছাড়া কনকনে ঠান্ডা উপেক্ষা করে মাঠে কাজ করছেন অনেক কৃষক। কনকনে ঠান্ডায় সময়মতো কাজে বের হতে পারছেন না তারা। বৃষ্টির ফোটার মতো পড়ছে কুয়াশা।

শীতে কাপছে পুরো উত্তরাঞ্চল। হিম বাতাসে কাবু মানুষ। শীতজনিত রোগের কারণে তিল পরিমাণ ঠাঁই নেই হাসপাতালগুলোতে। তীব্র শীতে চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর ও ফেনীতে বেড়েছে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা। এদের বেশিরভাগই শিশু। হাসপাতালে শয্যার চেয়ে রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা। চিকিৎসকরা বলছেন, শীতের এই সময়ে শিশু ও বৃদ্ধদের বাড়তি যত্ন নিতে হবে।

এক সপ্তাহে শুধু রংপুর মেডিকেলে চিকিৎসা নিয়েছেন প্রায় ১২ হাজার মানুষ। শীত দুর্যোগ মোকাবেলায় বিভাগ জুড়ে গঠন করা হয়েছে ৭৫ টি মেডিকেল টিম।

দিন-রাতের খুব একটা পার্থক্য নেই যেন উত্তরে। মেঘে ঢাকা আকাশ আর ভারী কুয়াশায় ঢাকা চারপাশ। জীবনের তাগিদে শীত ভেঙে ছুটছেন অনেকে। আক্রান্ত হচ্ছেন নানা রোগে। খরকুটোর আগুনে শীত নিবারণ করতে গিয়ে দগ্ধ হয়ে মৃত্যু যন্ত্রনায় ছটফট করছেন কেউ কেউ।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে গেল এক সপ্তাহে ৪০ ওয়ার্ডে শীতসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা হয়েছে। এর মধ্যে বার্ণ এন্ড পস্নাস্টিক সার্জারি, মেডিসিন, সার্জারিসহ শিশু ওয়ার্ডে মৃত্যু হার বেশি।

শীতের এ মৌসুমে বিভাগের ৫০ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ৮ জেলা হাসপাতালসহ দু’টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন প্রায় তিন লাখ মানুষ।

এদিকে শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কুড়িগ্রামে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগ-শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও সর্দি-কাশি। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে ৪০৫ জন। এদের অধিকাংশই শিশু। বর্তমানে হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের ১২ শয্যার বিপরীতে ভর্তি আছে ৬৪ জন শিশু।

২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর পরিমাণ। বয়স্ক রোগীর তুলনায় শিশু রোগীর পরিমাণ বেশি। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি শিশু সায়েব আহমেদের বাবা সবুজ আলী বলেন, আমার ছেলে গত তিন দিন থেকে ডায়রিয়ায় ভুগছে। বাড়িতে অবস্থা খারাপ হয়ে যাওয়ায় হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। এখন অনেকটা সুস্থ, তাই আজ ছাড়পত্র দিয়েছেন।

জেলা হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের ইনচার্জ তাসলিমা খাতুন বলেন, আমাদের এখানে বড়দের চেয়ে শিশুদের ডায়ারিয়ার প্রকোপ বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছে ৩৩ জন এবং রিলিজ হয়েছে ১১ জন। আমাদের এখানে পর্যাপ্ত ওষুধপত্রের সাপ্লাই আছে।

এদিকে নীলফামারীতে ঠান্ডা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শীতজনিত রোগে আক্রান্তের হার বেড়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপও বেড়েছে।

নীলফামারীর সিভিল সার্জন ডা. মো. হাসিবুর রহমান বলেন, শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এ সময় চলাফেরায় সবাইকে সাবধান হতে হবে, বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের ঠান্ডা লাগানো একেবারেই যাবে না।

নীলফামারীর জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ বলেন, শীত মোকাবিলায় পর্যাপ্ত সরকারি সহায়তা প্রস্তুত রয়েছে। শীতবস্ত্র হিসেবে জেলার ৬ উপজেলা ও চার পৌরসভায় তিন দফায় ৩৬ হাজার ৮৮০টি কম্বল পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া শীতার্ত মানুষদের কথা চিন্তা করে আরও শীতবস্ত্রের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। আশা করি দ্রুত শীতবস্ত্র পাওয়া যাবে। তা পেলেই শিগগির বিতরণের ব্যবস্থা করা হবে।

আগামীকাল মঙ্গলবার যেমন থাকবে আবহাওয়া পরিস্থিতি

পূর্বাভাসে সংস্থাটি জানায়, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং এটি কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগে সাময়িকভাবে বিঘ্ন ঘটতে পারে। এছাড়া, সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। দেশের কোথাও কোথাও দিনে ঠান্ডা পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে।

আগামী বুধবার যেমন থাকবে আবহাওয়া পরিস্থিতি

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, আগামী বুধবার খুলনা বিভাগে হালকা বৃষ্টি/গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে। দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং এটি কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগে সাময়িকভাবে বিঘ্ন ঘটতে পারে। এছাড়া, সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা (১-২) ডিগ্রি সে: বৃদ্ধি পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। দেশের কোথাও কোথাও দিনে ঠান্ডা পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে। আগামী পাঁচদিনে দেশে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

মন্তব্য করুন