রাঙামাটি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৮ মার্চ, ২০২৪, ০২:২১ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

লংগদুতে ফাঁদ পেতে হরিণ শিকার মামলা

নিরীহদের আসামি দিয়ে হয়রানির অভিযোগ

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

রাঙামাটির লংগদুতে ফাঁদ পেতে হরিণ শিকার করে হত্যার পর পাচারের চেষ্টার ঘটনায় একটি মামলা করেছে বন বিভাগের স্থানীয় স্টেশন কর্তৃপক্ষ। এমামলায় প্রকৃত দোষীদের আড়াল করে নিরীহ তিনজনকে আসামি দিয়ে অমানুষিক হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন আসামিদের পরিবারের লোকজন। আসামি তিনজনের মধ্যে মো. ছাইদুল ইসলাম (৪৮) নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। অপর দুজন আবদুল আলিম (৩২) ও মো. আজিজুল হক (৪৭) পলাতক।

বৃহস্পতিবার সকালে রাঙামাটি রিপোর্টার্স ইউনিটির সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য ও দাবি তুলে ধরেন আসামিদের পরিবারের লোকজন। এসময় উপস্থিত আসামি ছাইদুল ইসলামের স্ত্রী মোছাম্মৎ নুর বানু, ছোটভাই রহমত আলী দুলাল, আবদুল আলিম ও আজিজুল হকের আত্মীয় মো. নাজির আলী, মো. ইউনুস মিয়া, ওবায়দুল হক, জহিরুল আলম প্রকাশ দুলাল, আবু রায়হান বলেন,৭ মার্চ লংগদু উপজেলার ভাসান্যাদম ইউনিয়নের ভাসন্যাদম গ্রামের আবদুল মান্নান, আবদুর রহমান, মো. আলম ও মো. শামীম একটি ১৫ কেজি ওজনের সাম্বার হরিণ শিকার করে জবাই করেন। কিন্তু এসব প্রকৃত দোষীদের আড়াল করে যার বাড়ির উঠানে হরিণটি জবাই করা হয় সেই বাড়ির মালিক মো. ছাইদুল ইসলামকে মূল আসামি দিয়ে তাকে আটক করে আদালতে চালান দিয়ে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা
দেন বন বিভাগের লোকজন। অথচ ছাইদুল ইসলাম ওই সময় বাড়িতেও উপস্থিত ছিলেন না। অপর দুজন আবদুল আলিম ও আজিজুল হককে আসামি দেওয়া হলেও তারাও ঘটনার ধারেপাশে ছিলেন না। বর্তমানে এ দুজন পলাতক অবস্থায় মানবেতর দিনযাপন করছেন। ছাইদুল ইসলাম বিনা দোষে জেল খাটছেন। এছাড়া মামলায় স্থানীয় কাউকে সাক্ষী না করে দেওয়া হয়েছে বন বিভাগের নিজস্ব লোক ছয়জনকে।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলা হয়, ওই ঘটনায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের কাচালংমুখ বনশুল্ক ও পরীক্ষণ ফাঁড়ির স্টেশন কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলামমোটা অংকের টাকার বিনিময়ে প্রকৃত আসামিদের আড়াল করে বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধের অভিযোগ দিয়ে নিরীহ তিনজনের বিরুদ্ধে সাজানো মামলা দিয়ে তাদেরকে অমানুষিক হয়রানি করছেন। আমরা এ ধরনের মিথ্যা মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদসহ অবিলম্বে অভিযুক্ত নিরীহ তিনজনকে মামলা থেকে অব্যহতি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

এব্যাপারে জানতে যোগাযোগ করা হলে মামলার সাক্ষী বন বিভাগরে সংশ্লিষ্ট স্টেশনের বাগান মালী খোরশেদ আলম বলেন, ঘটনার দিন মূল আসামি মো. ছাইদুল ইসলামকে হাতেনাতে আটক করে আদালতে চালান দেওয়া হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের কাচালংমুখ বনশুল্ক ও পরীক্ষণ ফাঁড়ির স্টেশন কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, ঘটনার দিন ওই এলকার কতিপয় ব্যক্তি কাচালং সরকারি সংরক্ষিত বনাঞ্চল হতে ফাঁদ পেতে একটি সাম্বার হরিণ ধরে হত্যা করে মাংস পাচারের অপচেষ্টা চালাচ্ছে মর্মে খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল গিয়ে
অভিযান পরিচালনা করি।

এসময় মো. ছাইদুল ইসলাম নামে একজনকে হাতেনাতে আটক করা হয় এবং বস্তাবন্দি ১৫ কেজি হরিণের মাংস, মাথা, ভূড়ি ও চামড়া জব্দ করি। অপর দুই আসামি আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়। সেসময় তাদেরকে ধাওয়া করলেও এলাকাটি দুর্গম পাহাড় হওয়ায় আটক করা সম্ভব হয়নি। তাদেরকে ধরতে তৎপরতা চলছে। আটক করা হলে আদালতে চালান দেওয়া হবে।

মন্তব্য করুন