রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১০:৫৫ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

অবশেষে স্বপ্নপূরণ নোয়াখালীর অদম্য ইয়াসমিনের

ইয়াসমিন আক্তার। ছবি : রূপালী বাংলাদেশ

ক্রাচে ভর করে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে স্কুল-কলেজের পড়াশুনা শেষে শিক্ষক হতে চাওয়া
নোয়াখালীর অদম্য ইয়াছমিন আক্তারকে হুইল চেয়ার ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে তার
স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্য একধাপ এগিয়ে দিল ভাইয়া গ্রুপের প্রকাশনা দৈনিক রূপালী বাংলাদেশ পরিবার। পরবর্তীতে ইয়াছমিনের কৃত্রিম পা লাগানোর জন্য রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাও শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার থেকে।

‘যেখানে সম্ভাবনার রেশ, সেখানেই রূপালী বাংলাদেশ’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে গতকাল বিকেলে বনানী কার্যালয়ে রূপালী বাংলাদেশের সম্পাদক-প্রকাশক সায়েম ফারুকী ও যুক্তরাজ্য ব্যুরো প্রধান এ.কিউ চৌধুরী মুরাদ ইয়াছমিনকে উপহার সামগ্রী তুলে দেন। এসময় ইয়াছমিনের বাবা-মা ও ছোট বোন এবং পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক করিম আহমেদ, বার্তা সম্পাদক অনিল সেন, যুগ্ন বার্তা সম্পাদক (ডিজিটাল) ওমর ফারুক, প্রধান প্রতিবেদক উৎপল দাশ গুপ্ত ও নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি আবদুল্লাহ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

হুইল চেয়ার ও আর্থিক সহায়তা পেয়ে অশ্রুসিক্ত ইয়াছমিন রূপালী বাংলাদেশ
পরিবার ও যুক্তরাজ্য ব্যুরো প্রধান এ.কিউ চৌধুরী মুরাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

ইয়াছমিন বলেন, আমার স্বপ্ন শিক্ষক হওয়া। সে জন্য ক্রাচে ভর দিয়ে স্কুলে গিয়েছি। এখন কলেজে যাই। আমার স্বপ্নপূরণে রুপালী বাংলাদেশের সহায়তা সারাজীবন মনে রাখব। আগামীতে আমি যেন আমার স্বপ্ন পূরণ করতে পারি সেজন্য সবাই দোয়া করবেন।

যুক্তরাজ্য ব্যুরো প্রধান বলেন, প্রবাসে আমরা দেশকে প্রতিনিধিত্ব করি। প্রবাসে থাকলেও আমরা দেশ ও দেশের মানুষের কল্যানে সব সময়ই কাজ করি। দুই যুগ ধরে প্রবাসে থাকি। সেখানেও সাংবাদিকতা করি, দেশের জন্য মানুষের জন্য কাজ করি।

তিনি বলেন, প্রবাসে আমরা দেশকে প্রতিনিধিত্ব করি। তাই রেমিটেন্স যোদ্ধা প্রবাসীদের দেশে যেনো কোন ধরণের অসুবিধার মুখে পড়তে না হয়। 

তিনি আরো বলেন, ইয়াসমিনের জন্য হুইল চেয়ার প্রদান মাত্র শুরু। এরপর চিকিৎসার মাধ্যমে তাকে কৃত্রিম পা লাগিয়ে দেয়া হবে। ভবিষ্যতে ইয়াছমিনের লেখাপড়ায়ও আমরা রূপালী বাংলাদেশ পরিবার পাশে থাকবো। পাশাপাশি মানবতার মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ইয়াছমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসার অনুরোধ জানাচ্ছি।


পত্রিকার সম্পাদক-প্রকাশক সায়েম ফারুকী বলেন, ইয়াসমিনের এক পা নেই, তবুও সে শিক্ষক হবে। এমন স্বপ্নকে আমাদের এগিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা দেয়। রূপালী বাংলাদেশ পরিবার সব সময় ইয়াছমিনের পাশে থাকবে। ইয়াছমিনের জন্য শুভকামনা।


রূপালী বাংলাদেশের নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি আবদুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আমার লেখার মাধ্যমে একজন অসহায় মেয়ের উপকার হচ্ছে, এটাই আমার তৃপ্তি।


সংবাদকর্মীদের লেখনি দেশ ও দেশের মানুষের জন্য যে কল্যাণকর, ইয়াছমিন তার জ্বলন্ত প্রমাণ। আমি ইয়াছমিনের উজ্জল ভবিষ্যত কামনা করি।

ইয়াসমিনের বাবা মো. নুরুন্নবী বলেন, ধন্যবাদ রূপালী বাংলাদেশ পরিবার এবং এ.কিউ চৌধুরী মুরাদকে। তিন মেয়েকে কষ্ট করে লেখাপড়া করাচ্ছি। অভাবের সংসারে মেয়েদের স্বপ্ন পূরণে সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি।

এদিকে জেএমজি কার্গোর মনির আহমদ এবং প্রগতির এডুকেশন ট্রাষ্ট ইউকে’র সভাপতি মঞ্জুরুস সামাদ চৌধুরি মামুন ও সাধারণ সম্পাদক আকবর হোসেনসহ আরো অনেকেই ইয়াছমিনের কৃত্রিম পা সংযোজনের জন্য আশ্বাস প্রদান করেছে।

এই মানবিক কল্যাণে যারাই এগিয়ে আসবে, চৌধুরী এন্ড ফ্রেন্ডস সাদাকা ফাউন্ডেশন এবং রূপালী বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তাদেরকেও
সহযোগিতা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হবে।

উল্লেখ্য, গত পহেলা এপ্রিল নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি মোঃ আবদুল্লাহ চৌধুরীর পাঠানো একটি প্রতিবেদন দৈনিক রূপালী বাংলাদেশের অনলাইন পত্রিকা ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে প্রচার করা হয়। এরপরই মানব দরদি এ.কিউ চৌধুরী মুরাদ মেয়েটির লেখাপড়া ও তার স্বপ্ন পূরণের সাক্ষী হতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

এমন খবরে আবেগে আপ্লুত হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মেয়েটির মা বাবাসহ স্বজনরা। অন্যদিকে এই মহৎ কাজে ধন্যবাদসহ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন ইয়াসমিনের কলেজের শিক্ষক ও বন্ধুরা।

মন্তব্য করুন