ফেনী প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৮ মার্চ, ২০২৪, ০৫:৫৩ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

ফেনীর চরাঞ্চলের হাসি ফুটবে শতাধিক তরমুজ চাষির

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

জেলার সোনাগাজী উপজেলার উপকূলে চাষ হওয়া তরমুজ বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে অন্তত অর্ধশত কোটি টাকা। এ উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৫৭৫ হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ করেছেন স্থানীয় চাষিরা। রমজান সামনে রেখে ইতিমধ্যে ৩০ শতাংশ তরমুজ বিক্রি করেছেন তারা। গ্রীষ্মকালীন ফলটির বিক্রয় মূল্যে এবার হাসি ফুটবে উপজেলার তিন শতাধিক তরমুজ চাষির এমনটি দাবি উপজেলা কৃষি বিভাগের।

সোনাগাজী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন মজুমদার জানান, গত বছরে ৩৪৫ হেক্টর জমির তরমুজ বিক্রি হয়েছিল প্রায় ২৬ কোটি টাকার। এবার ৫০ কোটি টাকার বেশি বিক্রি হবে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ।

জানা যায়, বিগত বছরগুলোতে তরমুজে ব্যাপক লাভ হওয়ায় এবার আবাদ বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। কৃষকরা জানান, এ বছর সেচের ব্যবস্থাপনা ভালো  হওয়ায় অনাবাদি জমিতেও তরমুজ চাষে নেমেছেন অনেকে। কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নভেম্বরের শেষ সময় থেকে তরমুজ চাষের মৌসুম শুরু হয়। তবে, ব্যাপক চাহিদা বাড়ায় জমির ইজারামূল্যও দ্বিগুণ বেড়েছে।

উপজেলার ফেনী নদীর তীরবর্তী নবাবপুর, চরচান্দিয়া, চরদরবেশ, সোনাগাজী সদর ও আমিরাবাদ ইউনিয়নের গ্রামগুলো ঘুরে চাষিদের ব্যস্ত সময় কাটাতে দেখা গেছে। ক্ষেত ঘিরে চাষিদের ব্যাপক কর্মচাঞ্চল্য চোখে পড়ে। রমজান উপলক্ষে বেশি দামের আশায় অনেকে বড় সাইজের তরমুজ তুলতে শুরু করেছেন। কেউ কেউ বলছেন, ৩০ শতাংশ তরমুজ এরইমধ্যে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন আড়তে পাঠানো হয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলাতে ৫৭৫ হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষাবাদ হয়েছে। গেল বছর চাষ হয়েছে ৩৪৫ হেক্টর জমিতে এবং ২০২১ সালে চাষ হয়েছে ১১৭ হেক্টর জমিতে। ক্রমান্বয়ে তরমুজ চাষাবাদের পরিমাণ বাড়ছে।

সোনাগাজীর দক্ষিণ চরদরবেশের কৃষক মহি উদ্দিন জানান, তিনি গত বছর ৯ একর জমির তরমুজ বিক্রি করে ১১ লাখ টাকা আয় করেছেন। ভালো লাভ হওয়ায় এ বছর তিনি একাই আবাদ করেছেন ১৫ একর জমি। তিনি বলেন, দাম থাকলে তরমুজে ব্যাপক লাভ। তাই কোথাও এবার ফাঁকা জমি চোখে পড়ছে না। লাখপতির আশায় সবাই তরমুজ চাষে নেমেছে।

চরাঞ্চলের তরমুজ চাষিরা আরও জানান, আমন ধানের বীজ বোনা থেকে ফসল ঘরে তোলা পর্যন্ত প্রায় ছয় মাস সময় লাগে। প্রতি বিঘা আমন উৎপাদনে খরচ বাদ দিয়ে লাভ হয় সর্বোচ্চ ৮-৯ হাজার টাকা। অন্যদিকে তরমুজে সময়
লাগে সর্বোচ্চ দুই থেকে আড়াই মাস এবং বিঘা প্রতি খরচ বাদে লাভ হয় কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা।

এক প্রশ্নের জবাবে একাধিক চাষি জানান, সোনাগাজীর তরমুজ যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এ অঞ্চলের তরমুজ সরাসরি ফেনী শহরের বিভিন্ন আড়ত, চট্টগ্রামের ফলমন্ডি, ফিরিঙ্গি বাজার, পটিয়া, সাতকানিয়া ও কক্সবাজারের সদর ও চকরিয়ায় যায়। সেখানকার আড়তদারদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়।

আমিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. শামীম জানান, এই মৌসুমে আমরা ১৪ জন মিলে ১৫০ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। তিন মাসের জন্য জমির মালিকদের শতকপ্রতি ১০০ টাকা হারে চুক্তিমূল্য পরিশোধ করতে হয়েছে।

জানতে চাইলে উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র নাথ জানান, এক বিঘা পরিমাণ জমি প্রদর্শনী বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

মন্তব্য করুন