লাইফস্টাইল ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ০৫:৪৩ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

তীব্র গরমে পানি নাকি স্যালাইন?

ছবি সংগৃহীত

কয়েকদিন ধরে দেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ। এই গরমে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। অনেকের শরীরে দেখা দিচ্ছে পানিশূন্যতা। আর পানিশূন্যতা থেকে রক্ষা পেতে বেড়েছে খাবার স্যালাইনের চাহিদা। খাবার স্যালাইন আবিষ্কার হওয়ার পরেই ডায়রিয়া নিরাময়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এর জন্য সুস্থ্য হয়েছে কোটি মানুষ। আমাদের শরীর ঘামলে পানিশূন্যতার ঘাটতি দেখা দেয়। কিন্তু অনেককেই দেখা যায় একটু ঘামলে অথবা কাজ করে ক্লান্ত হলেই সঙ্গে সঙ্গে স্যালাইন খেয়ে নেন।

 

স্যালাইনের অতিরিক্ত মাত্রা গ্রহণ 

দিনে দুই থেকে তিনটি স্যালাইনও অনেককেই খেতে দেখা যায়। আসলে স্যালাইন খাওয়ার ফলে রক্তে যে লবণের ক্রিয়া হয় তা সব ধরনের শরীরের জন্য কতটা উপকারী আমরা কি সঠিকভাবে জানি? এক্ষেত্রে যদি কারো হাই ব্লাড প্রেসার থাকে এবং জরুরি প্রয়োজন ছাড়াই স্যালাইন খায় তাতে কি তার শরীরে প্রভাব পড়বে না? চলুন জেনে নেই-

স্যালাইনের উপাদানে সোডিয়াম ক্লোরাইড উপস্থিত থাকার কারণে রক্তে ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করতে পারে, যার কারণে শ্বাসকষ্ট হলেও তা অস্বাভাবিক হবে না। অতিরিক্ত স্যালাইন খাওয়ার ফলে রক্তে লবণের পরিমাণ বেড়ে হাই ব্লাড প্রেসারের সমস্যাও বেড়ে যেতে পারে। তুচ্ছ কারণে স্যালাইন খাওয়া স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর।

এ ব্যাপারে জনসচেতনতা বৃদ্ধি খুবই জরুরি। স্যালাইন খাওয়ার আগে অবশ্যই সঠিক পরিমাপ জানতে হবে। এ ছাড়াও দিনে এক প্যাকেটের বেশি স্যালাইন খেলে তা অবশ্যই ডক্টরের পরামর্শ নিয়ে খেতে হবে।

 

বাজারে স্যালাইনের অতিরিক্ত চাহিদা

আজ (২৮ এপ্রিল) রাজধানীর বাড্ডা, মোহাম্মদপুর, শ্যামলী, ধানমন্ডি এলাকার ফার্মেসি ঘুরে দেখা যায়, গরমের তীব্রতা বাড়ার কারণে ওরস্যালাইনের বিক্রি বেড়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গরমের সময় স্বাভাবিকভাবেই স্যালাইনের চাহিদা বাড়ে। তবে এবারের অত্যধিক গরমে সে চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুণ। 

বিভিন্ন ফার্মেসির কর্মচারীরা বলেন গরম বাড়ার পর থেকে স্যালাইনের চাহিদা বাড়ছে, বিক্রিও বাড়ছে। স্যালাইন ছাড়াও গ্লুকোজ, নাপা, প্যারাসিটামল ইত্যাদি পণ্যেরও বিক্রি বেড়েছে। বেশি গরমে অনেকের শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়, অনেকের ডায়রিয়া হয়, তাই চাহিদাটাও বৃদ্ধি পায়। তার আরো জানায় স্যালাইনের বিক্রি আগের চাইতে বেড়ে গেছে। অন্য সময় দিনে হয়তো ২ থেকে ৪ প্যাকেট স্যালাইন বিক্রি করতাম, এখন ১০ থেকে ২০ প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে। অনেকে আবার বক্সসহও কিনছেন।

অধিকাংশ ফার্মেসিতে এসএমসির ওরস্যালাইন ছাড়া অন্য কোনো কোম্পানির স্যালাইন তেমন একটা দেখা যায়নি। এসএমসি স্যালাইনের চাহিদা বেশি হওয়ায় ফার্মেসিগুলো অন্য কোম্পানির স্যালাইন রাখছে না।

প্রতি প্যাকেট এসএমসি ওরস্যালাইন বিক্রি হচ্ছে ৬ টাকায় এবং একই কোম্পানির টেস্টি স্যালাইন বিক্রি হচ্ছে ৭ টাকায়। এসিআই কোম্পানি স্যালাইন বিক্রি করলেও তার চাহিদা নেই, তাই ফার্মেসিতে রাখা হয় না। আর ইউনিভার্সাল কোম্পানি টেস্টি স্যালাইনের সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। তবে সব কোম্পানির স্যালাইনের দাম একই।

আদাবরের বাসিন্দা শেখ ফরিদ বলেন, গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম, তাই ওষুধ ও স্যালাইন কিনেছি। ফল মূলও কিনেছি, আপাতত কিছুদিন বাসায় রেস্ট নেব। 

এদিকে চিকিৎসকরা এই গরমে স্যালাইনের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে পানি, লেবুর শরবত, তরল ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। পাশাপাশি রাস্তার পাশের অস্বাস্থ্যকর ও উন্মুক্ত খাবার ও পানীয় না খাওয়ারও পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।

মন্তব্য করুন