খুলনা ব্যুরো

প্রকাশিত: ১৬ মে, ২০২৪, ১০:০৬ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

খুলনায় সংসদ সদস্যদের সাথে অপরাজিতাদের সংলাপ

নারীর ক্ষমতায়নে সব বাধা অপসারণ করতে হবে

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বেগম হাবিবুন নাহার এমপি বলেছেন, নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের পথে বাধা অসংখ্য। নারীকেই সে বাধা অতিক্রম করার শক্তি এবং সাহস অর্জন করতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ ভূমিকায় নারীরা রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের সঠিক পথে
রয়েছেন। প্রতিযোগিতা এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতার এই পথে হোঁচট খেয়ে থেমে গেলে হবে না। লক্ষ্য অর্জনে সব বাধাকে দূর করতে হবে।

নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন বিষয়ে সংসদ সদস্য ও অপরাজিতাদের মধ্যে সংলাপে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। সুইজারল্যান্ড সরকারের আর্থিক সহযোগিতা ও হেলভেটার সুইস ইন্টারকোআপারেশন বাংলাদেশের সমন্বয়ে ও রূপান্তর-এর আয়োজনে অপরাজিতা: নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন প্রকল্প’র পক্ষ থেকে (বৃহস্পতিবার) নগরীর সিটি ইন হোটেল মিলনায়তনে এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।

বেগম হাবিবুন নাহার এমপি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সমাজের সর্বক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ এখনও কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি। নারীকেই এই লক্ষ্য অর্জনে মূখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে। পুরুষ এখানে সহযোগীর ভূমিকা পালন করবেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির ভাষণে ননী গোপাল মন্ডল এমপি বলেন, নারীরা রাজনীতি সক্রিয় অংশগ্রহণ করছেন। রাজনীতির মাঠে নারীরা সামনের সারিতে থাকেন। দলও নারীদের সেভাবে মূল্যায়ন করছে। আমাদের গঠনতন্ত্রে নারী সম্পৃক্তের বিষয়টি রয়েছে। মাঠ পর্যায়ে এটি বাস্তবায়ন করতে হলে নারীদের বেশী বেশী দলের সাধারণ সদস্য পদে যেতে হবে। নারীদের রাজনৈতিক কর্মকান্ডে বেশী বেশী সম্পৃক্ত হতে হবে। আমরা চেষ্টা করি যারা সক্রিয় তারা যেন দলে যুক্ত হয়। আমাদের প্রধানমন্ত্রী দলের যারা অবদান রাখে তাদের মূল্যায়ন করে।
খুলনা বিভাগীয় অপরাজিতা নেটওয়ার্ক সভাপতি রিজিয়া পারভীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সংলাপ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন জাতীয় অপরাজিতা নেটওয়ার্ক-এর সদস্য এ্যাডঃ সেলিনা আক্তার পিয়া, বাগেরহাট জেলা অপরাজিতা নেটওয়ার্ক সভাপতি এ্যাড শরিফা খানম এবং খুলনা জেলা অপরাজিতা নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক আকলিমা খাতুন তুলি। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে থেকে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ খুলনা জেলা কমিটির সহ-সভাপতি নিমাই চন্দ্র বৈরাগী, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বাগেরহাট জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোজাফফর হোসেন আলম, জাতীয় পার্টি খুলনা জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মল্লিক হাদিউজ্জামান এবং বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি খুলনা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার উদ্দিন দিলু। অনুষ্ঠানে জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে বক্তৃতা করেন তেরখাদা মধুপুর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ মোঃ মোহসিন, ফুলতলা জামিরা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ মনিরুল ইসলাম সরদার, বটিয়াঘাটা বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ আসাবুর রহমান, বাগেরহাট বাড়ৈইপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব হায়দার আলী মোড়ল প্রমুখ।

অপরাজিতাদের মধ্যে থেকে দাবি তুলে ধরে বক্তৃতা করেন বন্দনা রায়, এ্যাড পপি ব্যানার্জী, সুস্পিতা গাইন, সাইদা ইসলাম নয়ন, এ্যাড তাহেদা নাজমা মিতু, তাছলিমা আক্তার বিষ্টি, পলি আক্তার, রহিমা খাতুন, উল্লাসিনী সরকার, কনিকা গোলদার, মাধবী সরকার, তানিয়া খাতুন, তাছলিমা খাতুন ছন্দা, লিপিকা রানী বৈরাগী, রিনা পারভীন প্রমুখ।

খুলনা বিভাগীয় অপরাজিতা নির্বাহী সদস্য রোকসানা পারভীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংলাপে ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন মোংলা উপজেলার চাঁদপাই নিউয়নের অপরাজিতা অর্পা মল্লিক। উপস্থাপিত ধারণাপত্রে ২০৩০ সালের মধ্যে রাজনৈতিক দলসমুহের কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় কমিটিতে কমপক্ষে ৩৩% নারী অন্তর্ভূক্ততিকরণ করতে হবে। জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে কমপক্ষে এক-তৃতীয়াংশ (৩৩%) নারীকে দলীয়ভাবে মনোনয়ন/সমর্থন দেয়ার ব্যবস্থা করা। রাজনৈতিক দলসমুহের কমিটিগুলোর মেয়াদ শেষ হওয়ার সাথে সাথে সম্মেলনের আয়োজন করে উপজেলা ও জেলার মূল কমিটিতে কমপক্ষে ৩৩% নারীর অন্তর্ভূক্তির পাশাপাশি নির্বাহী কমিটির গুরুত্বপূর্ণ একাধিক পদে নারীদের অন্তর্ভূক্ত করা। ইউনিয়ন পর্যায়ে দলের মূল কমিটিতে সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক পদ নারীকে দেওয়াসহ ছয়টি দাবি উত্থাপন করা হয়।

মন্তব্য করুন