অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪, ০৩:৩০ এ এম

অনলাইন সংস্করণ

বাংলাদেশের চিকিৎসাসেবার মান কোনো দেশের তুলনায় খারাপ নয় : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, বাংলাদেশের চিকিৎসাসেবার মান কোনো দেশের তুলনায় খারাপ নয়। শুধু সুযোগের অভাবে চিকিৎসকরা সেটি তুলে ধরতে পারেন না। বাংলাদেশের চিকিৎসকদের অন্যান্য উন্নত দেশের মতো সুযোগ দেওয়া হলে, এই চিকিৎসকরাই তাদের যোগ্যতা বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে পারবেন। 

তিনি বলেন, নাকের ক্যান্সারে আক্রান্ত ভুটানের ২৩ বছর বয়সী তরুণী কার্মডেমার সফল চিকিৎসায় বাংলাদেশি চিকিৎসকরা প্রমাণ করেছেন, বিদেশ থেকেও খুব শিগগিরই দলে দলে মানুষ বাংলাদেশে চিকিৎসা নিতে আসবেন। বিদেশিদের উপযুক্ত চিকিৎসাসেবা দেওয়ার সক্ষমতা বাংলাদেশের আছে।

শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভুটান থেকে চিকিৎসা নিতে আসা কার্মাডেমার শরীরে সফল অস্ত্রপচার শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। 

মন্ত্রী বলেন, বিদেশে আমাদের দেশের মানুষ নিয়মিতই চিকিৎসা নিতে যাচ্ছেন। অনেক টাকা খরচ করে কেউ কেউ নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছেন। অথচ, আমরা আজ ভুটান থেকে চিকিৎসা নিতে আসা কার্মাডেমা নামের যে রোগীকে চিকিৎসা দিলাম, তাতে সফলভাবে চিকিৎসা নিয়ে রোগী স্বাভাবিক অবস্থায় চলে এসেছেন। তার এই চিকিৎসা ভারত ও অন্যান্য অনেক দেশে সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছিল। অথচ, আমরা বাংলাদেশ থেকে তার চিকিৎসা সফলভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হলাম। রোগী সুস্থ অবস্থায় এখন ভুটান চলে যেতে পারবেন।

ভুটানের ২৩ বছর বয়সী রোগী কার্মডেমার চিকিৎসার জটিলতা সম্পর্কে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, এই রোগীর চিকিৎসা করা ছিল অত্যন্ত কঠিন ও জটিল। এর আগে ভারতে ও ভুটানে তার অপারেশন হয়েছিল, থাইল্যান্ডেও সে চিকিৎসা নিয়েছিল। তার এর আগের অপারেশনগুলো সাকসেসফুল না হওয়ায় পরবর্তী অপারেশন করাটা ছিল ভীষণ জটিল, ঝুঁকিপূর্ণ ও সময়সাপেক্ষ। এ কারণে অনেক দেশই তার আরেকটি অপারেশন করার সাহস করতে পারেনি।

 

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা এটিকে দেশের ভাবমূর্তির প্রশ্ন ধরে নিয়ে, চিকিৎসা বোর্ড করে এই অপারেশনে হাত দিই। দীর্ঘ সময় নিয়ে শরীরের অন্য জায়গা থেকে মাংস, হাড় কেটে নাকে লাগিয়ে দেওয়া এবং নাকের রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখাটা ছিল রীতিমতো চ্যালেঞ্জের কাজ। সেই কঠিন কাজটি আমাদের চিকিৎসকরা সফলতার সাথে করে দেখিয়েছেন। নিঃসন্দেহে এটি আমাদের দেশের চিকিৎসা সেবার জন্য বিরাট এক অর্জন। এখন এরকম সফলতার পর ভুটানেও ১৫ শয্যার বার্ন ইনস্টিটিউট করার ব্যাপারে আমাদের সাথে আলোচনা করা হচ্ছে। নেপালসহ অন্যান্য সার্কভুক্ত দেশগুলোতেও এরকম জটিল চিকিৎসাসেবা আমাদের চিকিৎসকদের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়াসহ বিদেশি রোগীদের দেশের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে।

সংবাদ সম্মেলনে ভুটানের রাষ্ট্রদূত রিং চেং কুইং সিল বলেন, বাংলাদেশ এই জটিল অপারেশন সফলভাবে সম্পন্ন করেছে, যা অন্য দেশ পারেনি। অন্য দেশগুলো যখন বলেছিল, এই অপারেশন সম্ভব নয়; তখন বাংলাদেশ বলেছিল, সেটি সম্ভব। বাংলাদেশ সেই অসম্ভবকে সম্ভব করেছে। এজন্য আমরা বাংলাদেশের জনগণ, সরকার ও চিকিৎসকদের কাছে কৃতজ্ঞ।

চিকিৎসাগ্রহীতা কার্মডেমা বলেন, যখন আমি সব আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম, তখন বাংলাদেশের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট ও বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রী আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন এবং সফল চিকিৎসাও দিয়েছেন। এজন্য আমি বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের কাছে চির কৃতজ্ঞ।

মন্তব্য করুন