নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪, ০১:০১ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

কেটেছে শৈত্যপ্রবাহ, ৭ বিভাগে বৃষ্টির আভাস

দেশের সাতটি বিভাগের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া শৈত্যপ্রবাহের ব্যাপ্তি কমেছে। বেড়েছে তাপমাত্রাও। পরিস্থিতি আরও উন্নতির আভাস রয়েছে। বৃহস্পতিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে তেঁতুলিয়ায় ১০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

গত দুই দিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হচ্ছে। বেশি বৃষ্টি হচ্ছে সাতক্ষীরায়। বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) দিবাগত মধ্যরাতে রাজধানী ঢাকায়ও বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃষ্টিপাতের এ ধারা বৃহস্পতিবারও (১ ফেব্রুয়ারি) অব্যাহত থাকার আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সকালে অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে কেটেছে টানা শৈত্যপ্রবাহ। এতে করে জনজীবনে ফিরেছে স্বস্তি। বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল একই সময়ে রেকর্ড হয়েছিল ৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

জেলার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের দেওয়া তথ্য মতে, গত ২৩ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত টানা ৯ দিন মৃদু, মাঝারি ও তীব্র শৈত্যপ্রবাহের পর ১০ ডিগ্রির ওপরে তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। এই কয়েকদিনের তাপমাত্রা রেকর্ড হিসেবে দেখা যায়, গত ৩০ জানুয়ারি ৭.৬, ২৯ জানুয়ারি ৬.৮, ২৮ জানুয়ারি ৫.০, ২৭ জানুয়ারি ৭.২, ২৬ জানুয়ারি ৫.৮, ২৫ জানুয়ারি ৮.৬, ২৪ জানুয়ারি ৮.৪ ও ২৩ জানুয়ারি ৭.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়। এর মধ্যে গত ২৪ জানুয়ারি থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত এ জেলায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। সকালে তাপমাত্রা রেকর্ডের তথ্যটি জানান জেলার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যাবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ।

বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কয়েকদিন ধরে ভোরেই কুয়াশা ভেদ করে দেখা মিলছে সূর্য। ঘড়ির কাটায় সময় বাড়তে থাকলে রোদ ঝলমলে হয়ে উঠে দিন। বেড়েছে তাপমাত্রা। স্বস্তি ফিরেছে জনজীবনে। শীতের তীব্রতা কমে যাওয়ায় সকাল থেকেই বিভিন্ন শ্রমজীবিদের কাজে যেতে দেখা গেছে। ১০ ডিগ্রির ওপরে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় খুলে দেওয়া হয়েছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো।

অন্যদিকে, ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে নোয়াখালী। প্রায় দুপুর পর্যন্ত এই ঘন কুয়াশা বিরাজমান থাকছে। এতে সড়কে যান চলাচল হচ্ছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। তাপমাত্রা মাপন যন্ত্রের পারদ কিছুটা ওপরে উঠলেও কমেনি শীতের তীব্রতা। ঘন কুয়াশা আর শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।

বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে জেলার সর্বত্র ঘন কুয়াশা দেখা যাচ্ছে। এতে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। সকাল ১০টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঘন কুয়াশা দেখা গেছে।

আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৬ ডিগ্রি ২ সেলসিয়াস। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৬ শতাংশ। 

জেলা শহরের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায়, ভোর থেকে কুয়াশার ঘনত্ব বেশি থাকায় যানবাহন চলাচলে অসুবিধা হয়। ফলে গাড়িগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে দেখা যায়। এ কারণে সকাল থেকে শহরসহ জেলার সঙ্গে বিভিন্ন উপজেলা ও দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল রয়েছে সীমিত।

আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানিয়েছেন, পূবালী লঘুচাপের বর্ধিতাংশ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত আছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

শুক্রবার (০২ ফেব্রুয়ারি) সকাল পর্যন্ত খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের দুই-এক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে অভ্যন্তরীন নৌ পরিবহন যোগাযোগে সাময়িকভাবে বিঘ্ন ঘটতে পারে।

সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ ৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে সাতক্ষীরায়। খুলনায় রেকর্ড করা হয়েছে ২৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত। ঢাকা বিভাগের গোপালগঞ্জে ২৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তবে রাজধানী ঢাকায় কোনো বৃষ্টিপাত রেকর্ড করার তথ্য জানায়নি আবহাওয়া অধিদপ্তর।

শুক্রবার সকাল থেকে শনিবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল পর্যন্ত সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল এবং চট্টগ্রাম বিভাগের দুই-এক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং কোথাও কোথাও এটি দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগে সাময়িকভাবে বিঘ্ন ঘটতে পারে।

সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। রংপুর ও রাজশাহী বিভাগে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং দেশের অন্যত্র তা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।

শনিবার সকাল থেকে রোববার (০৪ ফেব্রুয়ারি) আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। ঘন কুয়াশার অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন যোগাযোগে সাময়িকভাবে বিঘ্ন ঘটতে পারে।

সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সে হ্রাস পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। বর্ধিত পাঁচ দিনের আবহাওয়ায় বৃষ্টিপাতের প্রবণতা আছে।

মন্তব্য করুন