সাতক্ষীরা সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ২৮ মার্চ, ২০২৪, ০৩:২৬ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

কলারোয়ায় শেখ হাসিনার গাড়িতে হামলার আসামি ইয়াসিন গ্রেপ্তার

ছবি সংগৃহীত

২০০২ সালের ৩০ আগষ্ট সাতক্ষীরার কলারোয়ায় তৎকালিন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি বিএনপি কর্মী ইয়াসিন আলীকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড এ্যকশান ব্যাটালিয়ন র‌্যাব।

গত রাত ৯টার দিকে যশোর সদর উপজেলার শানতলা তিন রাস্তার মোড় থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সাজাপ্রাপ্ত ইয়াসিন আলী (৫৭) সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা সদরের তুলসীডাঙার ইউসুফ আলী মুন্সির ছেলে।

র‌্যাব-৬, সিপিসি-৩ যশোরের কোম্পানী অধিনায়ক মেজন মোঃ সাকিব হোসেন এক প্রেস ব্রিফিংএ উল্লেখ করেন যে, সাতক্ষীরার কলারোয়ায় শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা মামলায় সাত বছর সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী কলারোয়া উপজেলা সদরের তুলসীডাঙার ইয়াছিন আলীকে গোপান খবরের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে যশোর কোতোয়ালি থানাধীন শানপুর তিন রাস্তার মোড় থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রফেতারকৃত আসামিকে প্রাথমকি জজ্ঞিাসাবাদে জানা যায়, সে গ্রফেতার এড়ানোর জন্য সাতক্ষীরা থেকে পালিয়ে যশোর শহরের বেজপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় আত্মগোপনে ছিলেন। সেখানে তিনি দুটি রিকশা ভাড়া দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। ভাড়া বাসায় আত্মগোপনে থাকতো। দুটি রিকশা কিনে তা ভাড়া দিয়ে প্রাপ্ত টাকায় সে তার ঘরভাড়া ও অন্যান্য খরচ চালাতো। ইয়াসিনের বরিুদ্ধে বস্ফিোরক দ্রব্য আইনে একটি , হত্যা চষ্টোর একটি ও মাদক আইনে একটি বচিারাধীন মামলা রয়ছে। তাকে স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৩ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০০২ সালের ৩০ আগষ্ট সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কলারোয়ার এক মুক্তিযদ্ধোর ধর্ষিতা স্ত্রীকে দেখে যশোরে ফিরছিলেন তৎকালিন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ সময় কলারোয়া থানার পাশে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে রাস্তার উপর একটি যাত্রী শূন্য বাস আড় করে দিয়ে শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা চালানো হয়। হামলায় শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ নেতা, সাংবাদিকসহ কমপক্ষে একডজন লোক আহত হয়। এ ঘটনায় কলারোয়ার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোসলেমউদ্দিন বাদি হয়ে ২৭ জনের নাম উল্লেখসহ আরো ৭০/৮০ জন বিএনপি নেতা কর্মীর নামে থানায় মামলা দায়ের করেন।

থানা মামলা না নেওয়ায় আদালতে মামলা করা হয়। বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা শেষে ২০১৫ সালে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা কলারোয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম সাবেক সাংসদ ও জেলা বিএনপি’র সভাপতি হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে অস্ত্র, বিষ্ফোরক ও পেনালকোর্ডের ধারায় আদালতে পৃথক তিনটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

২০২১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরার মুখ্য বিচারিক হাকিম অভিযোগপত্রে উল্লেখিত সকল আসামীদের বিরুদ্ধে (টিআর- ১৫১/১৫ নং) সাড়ে চার থেকে ১০ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড দেন। এ মামলায় ইয়াসিন আলীর সাড়ে চার বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

একইভাবে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল -৩ এর বিচারক বিশ্বনাথ মন্ডল ২০০৮ সালের বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনের ৩ ধারায় (এসটিসি-২০৮/১৫) ও ১৯৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১৯ (এফ) ধারায় (এসটিসি-২০৭/১৫) ২০২৩ সালের ১৮ এপ্রিল সাবেক সাংসদ হাবিবসহ চারজনের বিরুদ্ধে পৃথক যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ ও ইয়াছিনসহ ৪৪ জনের প্রত্যেককের বিরুদ্ধে সাত বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন। এ মামলায় ইয়াসিন আলী, আব্দুল কাদের বাচ্চুসহ কয়েকজন পলাতক ছিলেন। এদের মধ্যে ইয়াসিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

মন্তব্য করুন