গাজীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৮ মার্চ, ২০২৪, ০১:৩২ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

গাজীপুরে বিআরটি প্রকল্পের গণশুনানিতে উপস্থিত সকলের ক্ষোভ

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

নগরে ছন্দময় পথচলার অঙ্গীকার নিয়ে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে দেশের প্রথম বাস র‌্যাপিট ট্রান্সজিট প্রকল্প। এই প্রকল্পের অগ্রগতি ও সম্ভাবনা এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের চাহিদা বাস্তবায়ন নিয়ে এক গণ শুনানি ও অংশীজন সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

যানজট নিরসনে গাজীপুরের শিববাড়ি থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত বিআরটি প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। এই প্রকল্পের অগ্রগতি ও সম্ভাবনা এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের চাহিদা বাস্তবায়ন নিয়ে এ গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গাজীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভাওয়াল সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এ গণশুনানি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সড়ক ও সেতু বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ও প্রকল্প সমন্বয়ক এ কে এম শামীম আক্তার। ঢাকা বিআরটি প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো: মনিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিআরটি প্রকল্পের পরিচালক (সড়ক) এ এস এম ইলিয়াস শাহ, গাজীপুর জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক বিভাগ) মো: আলমগীর হোসেন সহ বিআরটি প্রকল্পের শীর্ষ কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, নগর পরিকল্পনাবিদ, জনপ্রতিনিধি, বিআরটি প্রকল্পের বিভিন্ন অংশীজন, শিক্ষাবিদ ও স্থানীয় সাংবাদিকরা অংশগ্রহণ করেন।

গণশুনানিতে আয়োজকরা জানিয়েছেন, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ডিসেম্বরে চালু হচ্ছে বিআরটি প্রকল্প। এতে ২৫টি স্টেশনের মাধ্যমে যাত্রীরা ৩০-৪০ মিনিটে বিমান বন্দরে যেতে পারবেন।

বিআরটি লেনে কোন সিগন্যাল বা ক্রসিং থাকবে না।  

গণশুনানি ও সভাকে কেন্দ্র বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে মতবিনিময় হয়। এসময় বিআরটি পকল্পের এয়ারপোর্ট-গাজীপুর অংশ নিয়ে একটি প্রেজেন্টেশন প্রদান করা হয়। বিআরটি প্রজেক্টকে কিভাবে যুগোপযোগী ও জনবান্ধন করা যায় সে বিষয়ে পরামর্শ ও মতামত গ্রহণ করা হয়।

গণশুনানি অনুষ্ঠানে বিআরটি প্রকল্পের ক্ষোভ প্রকাশ করেন গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র ও বর্তমান মেয়রের প্রধান উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিআরটি লেন বাদে মহাসড়কে জায়গা বাকি থাকে প্রায় ১৬ ফিট। এই সরু জায়গা দিয়ে গাজীপুর চান্দনা চৌরাস্তা হয়ে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের গাড়ি স্বাভাবিক গতিতে চলাচল অসম্ভব।

তিনি আরো বলেন, বিআরটি প্রকল্পভুক্ত ১১৩টি সংযোগ সড়ক (৫৬ কি.মি) উন্নয়নের কথা থাকলেও প্রকল্পের শুরুতে মাত্র ৫৬টি সড়কের কাজ হয়েছে। যা ইতিমধ্যেই আবার সংস্কারের সময়ও হয়েছে। বিআরটি স্টেশনের সিঁড়ি ফুটপাত রুদ্ধ করায় এবং সিঁড়িগুলো খাড়াভাবে ৩৯ ফিট উঁচু হওয়ায় জনগণের ভোগান্তি আরো বাড়বে।

বিআরটি-প্রদর্শিত চিত্রের সাথে বাস্তবতার অমিল, প্রকল্পের ডিজাইনে মাঝখানে বিআরটি লেন, উভয়পাশে সাধারণ লেন রাখা হলেও ফুটপাত, ওভারব্রিজ ও ড্রেনেজ সিস্টেমে অসঙ্গতিসহ প্রকল্পের বিভিন্ন ভুল-ত্রুটি তুলে ধরে জাহাঙ্গীর আলম বিআরটি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা সবচেয়ে বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন, আপনারা এত বড় ভুল করলেন কেন? যারা ডিজাইন পরিকল্পনা করেছেন, তারা নিজেদের জন্য করেছেন নাকি জনগণের জন্য করেছেন?

গাজীপুরের একজন সিনিয়র সাংবাদিক বলেন, বিআরটি লেনে ৩৫ থেকে ৪০ মিনিটে গাজীপুর থেকে বিমান বন্দরে যাওয়া যাবে বলা হচ্ছে। গাজীপুর থেকে বিমান বন্দর পর্যন্ত ২০.৫০ কি.মি সড়কে মোট ২৫টি বিআরটি স্টেশন অর্থাৎ গড়ে প্রতি ০.৮২ কি. কিলোমিটারে একটি করে স্টেশন। প্রতি স্টেশনে দু'মিনিট বাস বিরতি নিলে সময় লাগে ৫০ মিনিট। অর্থাৎ বিরতিতেই যাচ্ছে ৫০ মিনিট তাহলে ৩৫ বা ৪০ মিনিটে বিআরটি বিমানবন্দরে নিভে কিভাবে?

তিনি বিআরটি প্রকল্পের ভুল ডিজাইন ও পরিকল্পনা প্রণয়নের সাথে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়ার জন্যও গাজীপুর জেলা প্রশাসককে অনুরোধ জানান।

মন্তব্য করুন