মেহেরপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৩১ মে, ২০২৪, ০৪:২৮ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

মেহেরপুরে কমেছে পাট চাষ, দিশেহারা কৃষকেরা

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

তীব্র তাপদাহ, খাল-বিল ভরাট, অনাবৃষ্টি, শ্রমিক সংকট ও পাটের ন্যায্য মূল্য না পাওয়াই চলতি বছর মেহেরপুরে কমেছে পাট চাষ। মেহেরপুর জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এ বছর ২২ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হলেও চাষ হয়েছে  ১৬ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমিতে। জেলায় জেআরও ৫২৪, বি জে আর আই তোষাপাট-৮, ভারতীয় কৃষি কল্যাণ, মহারাষ্ট্র ও চাকা জাতের পাট আবাদ করে থাকেন চাষিরা।

গাংনী উপজেলার চর গোয়াল গ্রামের কৃষক মুন্তাজ আলী দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে জানান, অন্যের দেড় বিঘা জমির ৪০ হাজার টাকায় বর্গা নিয়ে এবার পাট চাষ করেছি। অনাবৃষ্টির কারণে ইতিমধ্যেই ২০ হাজার টাকা মত খরচ হয়েছে। এই জমি থেকে পাট বাড়ি ওঠা পর্যন্ত প্রায় ৪০ হাজার টাকা খরচ হবে। শুধুমাত্র পাটের পাটকাঠি গুলোই লাভ হবে।

একই এলাকার কৃষক আশিক দৈনিক রুপালী বাংলাদেশকে জানান, পাট পচানোর জন্য কোনো উন্মুক্ত জলাশয় না থাকায় চাষিরা পাট চাষ করতে অনীহা প্রকাশ করছেন। খাল-বিল সংস্কার ও দখল হয়ে যাওয়া জলাশয় উন্মুক্ত ঘোষণা করার আহ্বান জানান।

মেহেরপুর সদর উপজেলার বুড়িপোতা গ্রামের কৃষক আলফাজ উদ্দিন খালু দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে জানান, প্রতি বছর আমি পাঁচ থেকে ছয় বিঘা জমিতে পাটের চাষ করি। মাঠে পাটের ফলন ভালো হলেও পাট চাষিরা নানা সমস্যায় ভোগেন। বিগত বছরগুলোতে দীর্ঘ অনাবৃষ্টি থাকার কারণে পুকুর, খাল-বিল ও নালাগুলোতে পানি ছিল না। যে কারণে কৃষকরা পাট জাগ দেওয়ার ক্ষেত্রে বড় সমস্যায় ভোগেন। পাট জাগ দেওয়ার মতো পানির ব্যবস্থা না থাকায় অনেকে পুকুর ভাড়া করে সেখানে পানি দিয়ে পাট জাগ দেন। তাতে খরচ বাড়ে অনেক। আবার অনেকেই জমিতেই বাঁধ তৈরি করে পানি জমিয়ে কাদা মাটি দিয়ে পাট জাগ দেন। ফলে পাটের মান নষ্ট হওয়ায় ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হন কৃষক।

মুজিবনগর উপজেলার গৌরীনগর গ্রামের কৃষক সাইদুর রহমান টুটুল দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে জানান, চলতি বছরে আমার তিন বিঘা জমিতে পাট চাষ আছে। গত বছরে আমি সাত বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলাম। পাট জাগ দেওয়া ও শ্রমিকের অভাবে হিমশিম খেতে হয়েছিল। তাই এই বছর পাট চাষ কমিয়ে এনেছি।   

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে জানান, চলতি বছর লক্ষ্যমাত্রা চেয়ে অনেক পরিমাণে পাটের চাষ কম হয়েছে। তীব্র তাপদাহ ও অনাবৃষ্টির কারণেই কৃষকেরা সঠিক সময় পাটের বীজ বপন করতে পারেনি। এছাড়াও পাট পচানোর জায়গা সংকট। নদী নালা খাল মিলে মৎস্য বিভাগ থেকে পাট পাচাতে দিতে না দেওয়াই পাটের চাষ কমেছে।

 

মন্তব্য করুন