মেহেরপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৯ জুন, ২০২৪, ০৭:০২ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

মেহেরপুরে কাঁঠাল গাছে ফলে ফলে ভরে গেছে

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

জাতীয় ফল কাঁঠাল। ফলের রাজা হিসেবেও সবার কাছে সমাদৃত। এটি শুধুমাত্র একটি মৌসুমী ফলই নয়- পুষ্টিগুণে ভরপুর ও অর্থকরী ফসল হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। মেহেরপুরের গাংনীর সর্বত্র এখন কাঁঠাল গাছগুলিতে ঝুলন্ত কাঁঠালে ছেঁয়ে আছে। কোন কোন এলাকায় আগাম জাতের কাঁঠালগুলি পাঁকতে শুরু করেছে। পাঁকা কাঁঠালের মিষ্টি গন্ধে কীট পতঙ্গরা ভিড় করছে গাছে গাছে। আর সেই আনন্দে বাগান মালিকরা গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত। তবে কাঁঠাল প্রক্রিয়াজাত করণের কোন সুবিধা না থাকায় এ এলাকার মানুষেরা চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কাঁঠাল গাছগুলো ফলে ফলে ভরে গেছে। প্রতিটি গাছে ১০০ থেকে ২০০ পর্যন্ত ফল ধরেছে। বছর দশেক আগেও আম কাঠালের বাগান ছিল। এখন শুধু আমের বাগান রয়েছে। এখানকার অধিকাংশ কাঁঠাল গাছ বাগানভিত্তিক না। বাড়ির আঙ্গিনায়, রাস্তার দুই ধারে, স্কুল-কলেজ চত্বরে প্রচুর কাঁঠাল গাছের দেখা মেলে। অভাবের কারণে অনেকে কাঁঠালের গাছ বিক্রি দিচ্ছে। আসবাবপত্র প্রস্তকারী ও ব্যবসায়ী এসব নামমাত্র মূল্যে কিনে ফায়দা লুটছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

কাঁঠাল ব্যবসায়ীরা দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে  জানান, হাট-বাজারগুলোতে পাঁকা কাঁঠাল উঠতে শুরু করেছে। অনেকেই আছেন প্রতি বছরই প্রায় এক থেকে দেড় লক্ষাধিক টাকার কাঁঠাল বিক্রি করেন। দুই থেকে তিন মাস কাঁঠালের ভরা মৌসুম। এ সময় পাইকার ও শ্রমিক শ্রেণির লোকদের বাড়তি আয়ের সুযোগ হয়। এবার আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় কাঁঠালের ফলনও ভালো হয়েছে। গত বছরে কাঁঠাল কম ধরেছিল তাই দাম একটু বেশি ছিল। এবার অনুকুল আবহাওয়ার কারণে ফলন বেশি হয়েছে। তাই অনেক কম দামে কাঁঠাল পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে ব্যবসায়িরা।

এলাকার অনেকেই মন্তব্য করেছেন, অন্যান্য ফল ও গাছ নিয়ে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে যত তৎপরতা লক্ষ করা যায়, কাঁঠাল নিয়ে তার সিঁকি ভাগও হয় না। অথচ কাঠাল একটি অর্থকরী ফসল ও জাতীয় ফল। কোন পৃষ্ঠপোশকতা না থাকায় ও অবাধে কাঠাল গাছ নিধন হওয়ায় এখন কোন বাগান পাওয়া যায় না। বাড়ির আঙ্গিনাতে বা রাস্তার ধারে অনেকেই গাছ লাগান। সরকার একটু নজর দিলেই অনেকেই কাঠাল বাগানে উদ্বুদ্ধ হতো।

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও আব্দুল্লাহ আল মারুফ দৈনিক রূপালি বাংলাদেশকে জানান, কাঁঠালে আছে প্রচুর ভিটামিন। প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁঠালে পুষ্টিমান হিসেবে মোট কার্বোহাইড্রেট ২৪ গ্রাম, বায়াটারি ফাইবার ২ গ্রাম, প্রোটিন ১ গ্রাম, ভিটামিন এ ২১৭ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি ৬.৭ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৩৪ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ৩৭ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ৩০৩ মিলিগ্রাম এবং ক্যালরি পাওয়া যায় ৯৪ মিলিগ্রাম। এজন্য কাঁঠালকে এখনো গ্রামের মানুষের কাছে পুষ্টি ভান্ডার হিসেবে বিবেচিত হয়। 

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার দৈনিক রূপালি বাংলাদেশকে জানান, কৃষিপণ্য কাঁঠাল মুলত একটি মৌসুমী সুস্বাদু ফল। কাঁঠালের বিচি তরকারীতেও সমান জনপ্রিয়। এলাকায় কোন কাঁঠাল প্রক্রিয়াজাত করার বাবস্থা না থাকায় কৃষকরা তাদের ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কাঁঠাল প্রক্রিয়াজাত ব্যবস্থা গড়ে তুললে এ উপজেলার মানুষ অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হবে।

মন্তব্য করুন