চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৯ জুন, ২০২৪, ০৮:০৩ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

শিবগঞ্জে ১১টি সাঁওতাল পরিবারের অসহায় জীবন-যাপন

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

শিবগঞ্জে আদিবাসী সাঁওতালের প্রায় ৪০জনের ১১টি পরিবার অসহায় জীবনযাপন করছে। এদের বসতভিটা না থাকায় ডাড়ার খাস জমিতে চারটি পরিবার ও অন্যের ও জমিতে সাতটি পরিবার সস্তা টিনের খুঁপড়ি ঘরে তলে অসহায় জীবনযাপন করছে বলে জানা গেছে। এরা একটি ঘরেই ৫/৬জন বাস করে। বর্তমানে কচ্ছপ ও বামুজ ধরা ছাড়া মূল পেশা আর নেই। এ ১১টি পরিবা এখন বাস করছে উপজেলার দাইপুখুরিয়া ইউনিয়নের চকশ্রীরামপুর বানপাড়ার ডাকরার ডাড়ায় ও তার আশেপাশে।

সরজমিনে ৬৫ বছরের বৃদ্ধা জলোশ্বরী রায জানায়, তার স্বামী হরিয়া রায় দ্বিতীয় বিয়ে করে এলাকারই অন্য পাড়ায় বসবাস করছে। আমি তিন ছেলে ও এক প্রতিবন্ধী মেয়ে নিয়ে চকশ্রীরামপুর বান পাড়ায় ডাকরার ডাড়া নামক একটি খাড়ির তলায় খুঁপরি একটি টিনের ঘরে বাস করছি। মহিলা হয়েও কামলা খেটে যে আয় হয় তাই দিয়ে কোন রকমে সংসার চালায়। সরকারী সহযোগিতা ঈদেও সময় মাঝে মাঝে একটি পাই। ছেলে মেয়েদের জন্মনিবন্ধন করিনি।

একই কথা বললেন লালবন রায় রানী রায়, মিঠন রায়, কণিকা রায়। তারা জানান, এখানে চারটি পরিবারের ২০জন সদস্য এভাবেই বসবাস করি।এটাই আমাদের জীবন। তারা আরো জানায় বর্ষা ও বন্যার সময় ডাড়ায় পানির নীচে আমাদের এ খুঁপড়ি ঘর গুলো তলিয়ে গেলে পাশের বাগানে আশ্রয় নিই । অন্য দিকে চক শ্রীরামপুর গ্রামে জবেদ হাজীর জমিতে বহু বছরে ধরে আদিবাস সাঁওতালের চারটি পরিবার বাস করে।

তার মধ্যে ফুচুয়া রায় (৬৫) জানান, চারটি পরিবারের প্রায় ১২জন সদস্য নিয়ে আমরা এখানে বাস করি । আমাদের নিজেদের কোন জায়গা না থাকায় জবেদ হাজীর জমিতে ছোট ছোট খুঁপরি ঘর তুলে বাস করছি। আমরা শুধু কামলা খেটে দিন চালায়। মাঝে মাঝে জবেদ আলি হাজি অন্যত্রে চলে যেতে বললেও যেতে পারি না। সামর্থ না থাকায় যেতে পারি না। অন্য একটি পাড়ায় আরো তিনটি পরিবার বাস করে। তাদেরও একই অবস্থা। পূর্ণবাসনের দাবী থাকলেও তারা বুঝে না কোথায় দাবী করতে হবে। তবে তারা একসাথেই থাকতে চাই।

এব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর রেজা বলেন, পরিবারগুলো সত্যি অসহায়। আমি চেয়ারম্যান হিসাবে যতটুকু পারি সহযোগিতা করি। আমি উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় তাদের সমস্যার কথা তুলে ধরবো।তাছাড়া আমি নিজ দায়িত্বে তাদের সন্তানদের জন্ম নিবন্ধনের ব্যবস্থা নিবো।

শিবগঞ্জ উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার কাঞ্চন কুমার দাস বলেন, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী হিসাবে তাদের নায্য অধিকার সমাজ সেবা অফিসের পক্ষ থেকে দেয়া হবে। শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ উজ্জল হোসেন বলেন ঘটনাটি আমার অজানা। অসহায় বান্ধব সরকারের আমলে ইউপি চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অফিসার পাঠিয়ে সঠিক তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

মন্তব্য করুন