বিনোদন প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৩০ জুন, ২০২৪, ০৮:৪৬ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

পরিচালক রাশিদ পলাশকে মারলেন ববি

রাশিদ পলাশ ও ইয়ামিন হক ববি। ছবি: সংগৃহীত

তরুণ চলচ্চিত্র পরিচালক রাশিদ পলাশ ও চিত্রনায়িকা ইয়ামিন হক ববির মধ্যে তুমুল দ্বন্দ্ব, মারামারিতে রূপ নিয়েছে। পরিচালক ও নায়িকার দ্বন্দ্ব এখন টক অব দ্যা কান্ট্রি।

‘ময়ূরাক্ষী’ সিনেমা ঘিরে এই অন্তর্দ্বন্দ্বের খবর পাওয়া গেল। সিনেমাটির পরিচালকের বিরুদ্ধে নায়িকা ববির পাহাড় সমান অভিযোগ, শুটিং সেটে পরিচালকের কথার সঙ্গে কাজের কোনো মিল পাননি। ঈদুল আজহায় মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ময়ূরাক্ষী’ সিনেমার পরিচালক রাশিদ পলাশের সঙ্গে চিত্রনায়িকা ইয়ামিন হক ববির তুমুল দ্বন্দ্ব বাঁধে; যা শেষ পর্যন্ত গড়িয়েছে হাতাহাতিতে।

জানা গেছে, ‌‘ময়ূরাক্ষী’ সিনেমার প্রযোজক সব শিল্পীর পারিশ্রমিক পরিচালকের হাতে দিলেও তিনি শিল্পীদের ঠিকমতো পরিশোধ করেননি। ফলে নায়িকার সঙ্গে দ্বন্দ্ব বাধে নির্মাতার। ফলশ্রুতিতে পরিচালক রাশিদ পলাশকে চড় মাড়েন ববি । ঈদের দ্বিতীয় দিন (১৮ জুন) রাতে ঘটনাটি নিকেতনের একটি বাসায় ঘটেছে বলে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আজ ইন্টারন্যাশনাল সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে। সিনেমাটির নির্বাহী প্রযোজক শাহাদাত হোসেন লিটনও এই দ্বন্দ্বের সত্যতা শিকার করেছেন। বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে, এ নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা ও সমালোচনা।

হঠাৎ কি নিয়ে পরিচালক ও নায়িকার দ্বন্দ্ব? অন্তরালে কি লুকিয়ে আছে? এমন নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের একজন বলেন, সময় মতো সিনেমাটি শেষ করে দিতে পারেননি রাশিদ পলাশ। যে বাজেটে সিনেমার কাজ শেষ করার কথা ছিল তারও তিনগুণ টাকা খরচ হয়েছে। সিনেমার জন্য স্পন্সর ম্যানেজ করে দেওয়ার কথা বলেও ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। রাশিদ পলাশ কোনো কিছুই ঠিকমতো পূরণ করতে পারেনি। তবুও পরিচালককে ছাড় দিয়ে আসছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান।

পরিচালকের কর্মকাণ্ড কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি চিত্রনায়িকা ববি। ফলশ্রুতিতে পলাশের সঙ্গে তার ফাইট হয়। ঈদের পরের দিন সন্ধ্যায় নিকেতনের একটি বাসায় মারামারির ঘটনাটি ঘটে। শুরু থেকেই রাশিদ পলাশ অপেশাদার কর্মকাণ্ড করে আসছেন। যে গল্পে সিনেমাটি নির্মাণ করার কথা ছিল তা সেভাবে করা হয়নি।

প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের দাবি, ববিকে আরও ব্যবহার করা যেত। কিন্তু সেটা করতে ব্যর্থ হয়েছেন পরিচালক। কোনো কথাই সে রাখতে পারেনি। কাজের ব্যাপারে যদি পেশাদার এবং সততা রাখত তাহলে দর্শক আরও ভালো কিছু পেতে পারত। সে জায়গা থেকে ববির বিষয়টি সহ্য হয়নি। আমরা সব টাকা সময় মতো দিলেও শিল্পীদের ঠিকমতো পারিশ্রমিক দেওয়া হয়নি। এমন অভিযোগ পেয়েছি। ববি নিজেও এ সংক্রান্ত অভিযোগ পেয়েছেন। পলাশের সঙ্গে সবার গণ্ডগোল। টাকা নিয়েও যদি সবাইকে না দেয় পরিচালক সেই দায় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান নেবে না। কারণ, তার সাথে সবার কাজ নিয়ে চুক্তি হয়েছে।

তা ছাড়া কম সংখ্যক সিনেমা হলে মুক্তি পেয়েছে বিষয়টি ভালো লাগেনি কারও। আমাদের সহযোগিতা চাইলে হয়ত আরও ভালো কিছু করা যেত। কাজে অনভিজ্ঞ রাশিদ পলাশ। সে ১০ বছর সময় নিয়ে ‘পদ্মাপুরাণ’ বানিয়েছে। নতুন একজন পরিচালক। সে যদি সহযোগিতা চাইত তাহলে কাজটি আরও ভালো হতে পারত। ঠিকমতো হলই পায়নি। সবকিছু নিয়ে ববির অনেক খারাপ লেগেছে। অনেক বেশি কষ্ট পেয়েছে। 

যখনই পলাশের সঙ্গে আমরা কথা বলতে চাইতাম তখন উল্টো প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের ভুল ধরার জন্য উঠে পড়ে লাগত। ভুল কিংবা অনভিজ্ঞ হতেই পারে। না পারা দোষের কিছু না। সে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা নিতে পারত। নিজের দোষ অন্যকে চাপিয়ে দিলে সেটাকে ক্রাইম বলব। সবকিছু নিয়ে ক্ষিপ্ত ববি। যার কারণে মারধর করেছেন। প্রমোশনের জন্য টাকা নিয়ে প্রমোশন করেনি। তিন বছর ধরে সিনেমাটি নির্মাণ করছেন কিন্তু মুক্তির আগে ট্রেলারই ছাড়ত পারল না। এ জন্য একাধিকবার টাকাও নিয়েছে।

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে ‘ময়ূরাক্ষী’ সিনেমার পরিচালক রাশিদ পলাশকে একাধিকবার কল দেয়া হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। এ নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন এই পরিচালক। ববি এ প্রসঙ্গে বিস্তার কথা না বললেও ঘটনার সত্যতা শিকার করেছেন। এ ঘটনায় উত্তাল নেট দুনিয়া।

চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে এই সমন্বয়হীনতা কিংবা সৃজনশীল ভাবনার পার্থক্যের প্রভাব পড়ে খোদ চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির ওপর। পরিচালক মতিন রহমান বলেন, ‘চলচ্চিত্রশিল্পের জন্য এসব হওয়া মোটেও উচিত না। সবার অংশগ্রহণেই একটা সিনেমা সুন্দর হয়ে ওঠে। এসবের একটি যদি খর্ব হয়, তাহলে ভালো সিনেমা হয়ে ওঠে না।’

২০২২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি এফডিসি দিয়ে ‘ময়ূরাক্ষী’ সিনেমার শুটিং শুরু হয়। থেমে থেমে কয়েক দফায় শুটিং করে সিনেমাটির কাজ শেষ হয়। প্রেম ও প্রতারণার গল্পে নির্মিত সিনেমাটি ঈদুল আজহার দিন নামেমাত্র প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে।

মন্তব্য করুন