বগুড়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৩০ জুন, ২০২৪, ০৭:৩২ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

প্রসূতির পর মারা গেল ভাই, সুস্থ আছে নবজাতক

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বগুড়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় একদিনেই নিঃসন্তান হয়েছেন কৃষক দম্পতি। প্রসূতি কন্যা জুথি খাতুনের মৃত্যুর ১২ ঘন্টার ব্যবধানে না ফেরার দেশে চলে গেছে একমাত্র ছেলে জিহাদ হাসান। তবে সড়ক দুর্ঘটনায় অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া নবজাতক সুস্থ আছে। বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার ভাগ-শিমলা এলাকার কৃষক হেলাল আকন্দ দম্পতির সুখ কেড়ে নিয়েছে বেপরোয়া সিএনজি ও ইজিবাইক।

সুত্রমতে, মহাসড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে পারেনি হাইওয়ে পুলিশ। সড়কে থ্রি-হুইলার দৌরাত্বের কারণে ঘটছে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। কুন্দারহাট হাইওয়ে থানার সামনে দিয়েই মহাসড়কে চলে সিএনজি, ইজিবাইক ও অটোভ্যান। আঞ্চলিক সড়কেও বেপরোয়া তিন চাকার যানবাহন। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে উপজেলা প্রশাসনের কার্যকর ভূমিকা নেই বললেই চলে।

শনিবার নন্দীগ্রাম উপজেলার কাথম-কালিগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কে বেপরোয়া গতির সিএনজি ও ইজিবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রসূতির মৃত্যু হয়। পরদিন রোববার তার ছোট ভাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। নিহতরা উপজেলার ভাগ-শিমলা এলাকার হেলাল আকন্দ দম্পতির দুই সন্তান জুথি খাতুন (২২) ও জিহাদ হাসান (১৫)। এ দুর্ঘটনায় আহত হেলাল উদ্দিন আকন্দের স্ত্রী জেসমিন বেগম (৪৫) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। সুস্থ আছে নিহত প্রসূতির চারদিনের কন্যা নবজাতক। সড়ক দুর্ঘটনায় অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া নবজাতক নানীর কোলে বারবার কেঁদে উঠছে।

নিহতের পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন ভাগ-শিমলা এলাকার কৃষক হেলাল উদ্দিন আকন্দ। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে সুখের সংসার। একমাত্র কন্যা জুথি খাতুন স্থানীয় ভাটরা খান চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৮ সালে এসএসসি পাস করে। একমাত্র ছেলে জিহাদ হাসান বর্তমানে একই বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণিতে পড়াশোনা করতো। শেরপুর উপজেলার এনামুল হকের সঙ্গে ২০২১ সালে জুথি খাতুনের বিয়ে হয়। সম্প্রতি অন্তসত্ত্বা জুথি বাপের বাড়িতে যায়। গত বুধবার বগুড়া শহরের হেলথ সিটি ক্লিনিকে সিজারে তার কন্যা সন্তান হয়।

সুস্থ প্রসূতিকে নবজাতকসহ তার মা এবং ভাই বগুড়া থেকে ভাড়ায় চালিত সিএনজিতে বাড়ির পথে রওনা দেয়। সে সময় থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছিলো। বাড়ির কাছাকাছি এসে মাত্র এক কিলোমিটার আগেই পথিমধ্যে শিমলা কচুগাড়ি ব্রিজের পাশে সড়াতলা এলাকায় বেপরোয়া গতির সিএনজি ও ইজিবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নবজাতকসহ সিজার করা প্রসূতি ছিটকে পড়েন। অলৌকিকভাবে নবজাতক বেঁেচ গেলেও জুথির মৃত্যু হয়। তার ছোট ভাই জিহাদকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ১২ ঘন্টার ব্যবধানে সে মারা গেছে।

রোববার নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজমগীর হোসাইন আজম জানান, শনিবার সড়ক দুর্ঘটনার পর আহত তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে প্রসূতির মৃত্যু হয়। তবে নবজাতক সুস্থ আছে। রোববার সকালে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজন মারা গেছে। দুর্ঘটনা কবলিত ইজিবাইক আটক করা গেলেও সিএনজি পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি।

মন্তব্য করুন