পিরোজপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৩ মে, ২০২৪, ১০:৩৮ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

স্বরূপকাঠির পরাজিত প্রার্থীর কর্মীদের পিটিয়ে আহত

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল হকের আনারশ মার্কার কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্ধী পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী এস এম মুইদুল ইসলাম মুহিদের মোটরসাইকেল মার্কার কর্মী সমর্থকদের পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিজয়ী প্রার্থীর কর্মী কর্তৃক উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে পরাজিত প্রার্থী মুহিদের কর্মীদের পিটিয়ে আহত করার পাশাপাশি বহু কর্মীকে নানা ধরনের হুমকি প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানা গেছে।   

মারধরে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন প্রার্থী মুহিদের কর্মীরা হলো পরিতোষ মিস্ত্রী (৬২), দেবব্রত হাওলাদার (৩০), রিয়াজ মোল্লা (৩০), মো. জাকারিয়া (৩৩), রাজিব সরকার (৩৬), মো. লোকমান (৩২), মিল্টন বৈদ্য (৩৬), জয়ন্ত ঢালী (২৯)। 

পুলিশ বৃহস্পতিবার ঘটনার সাথে জড়িত মাসুদ গাজী, সাইফুল ও ফয়সাল নামের আব্দুল হকের তিনজন কর্মীক গ্রেফতার করে পিরোজপুর আদালতে পাঠিয়েছে।  

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন জলাবাড়ি ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের পরিতোষ মিস্ত্রী জানান, নির্বাচনে তিনি প্রার্থী মুহিদের মোটর সাইকেল মার্কার পক্ষে কাজ করেছেন। বুধবার বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল হকের পক্ষে কাজ করা ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আশিষ বড়ালের নেতৃত্বে আনারশ মার্কার কর্মীরা তাকে মেরে তার মাথা ফাটিয়ে দেয়। আশিষের নেতৃত্বে ওই বাহিনি মুহিদের আরেক কর্মী ৫ নং ওয়ার্ডের দেবব্রত হাওলাদারকেও মেরে আহত করেছে।

এছাড়াও ওই ইউনিয়নের মুহিদের অর্ধশত কর্মীকে নানা ধরনের হুমকি দিয়েছে আশিষ। ওই ইউনিয়নের দাদাবাবু খ্যাত আশিষ বড়াল হত্যা সহ একাধীক মামলার আসামী। একই ইউনিয়নে মুহিদের আরেক কর্মী ২ নং ওয়ার্ডের রিয়াজ মোল্লাকে পিটিয়ে আহত করেছে হকের কর্মী স্বাধীন আইচ। স্বরূপকাঠি সদর ইউনিয়নে ২ নং ওয়ার্ডের মুহিদের কর্মী লোকমানকে মেরে তার হাত ভেঙ্গে দিয়েছে হকের কর্মীরা। মুহিদের কর্মী সারেংকাঠি ইউনিয়নের মধ্য করফা এলাকার মিল্টন বৈদ্য ও গুয়ারেখা ইউনিয়নের বাটনাতলা এলাকার জয়ন্ত ঢালীকেও মেরে আহত করেছে আব্দুল হকের কর্মীরা। 

এছাড়াও নির্বাচনের দিন আটঘর-কুড়িয়ানা ইউনিয়নে মুহিদের মোটরসাইকেল মার্কার পক্ষে কাজ করায় কুড়িয়ানা এলাকার রাজিব সরকার ও কাটাপোল এলাকার জাকারিয়াকে মেরে রক্তাক্ত জখম করেছে স্বপন দেউড়ি ও সবুজ বড়ালের নেতৃত্বে বিজয়ী প্রার্থী আব্দুল হকের কর্মীরা। ওই ইউনিয়নের মুহিদের বহু কর্মীকে প্রতিনিয়ত নানা ধরনের হুমকি দেয়া হচ্ছে। 

এ ব্যাপারে পরাজিত প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মুইদুল ইসলাম মুহিদ বলেন, নির্বাচনের দিন থেকেই বিভিন্ন ইউনিয়নে আমার কর্মীদেরকে মেরে আহত করছে আব্দুল হকের কর্মীরা। তারা আমার কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নানা ধরনের হুমকি প্রদান করছে।

নেছারাবাদ থানার ওসি মো. গোলাম ছরোয়ার জানান, ইতিমধ্যে থানায় দুটি মামলা হয়েছে, মামলার তিনজন আসামীকে গ্রেফতার করে বৃহস্পতিবার আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। 

প্রসঙ্গত, গত ২১ মে অনুষ্ঠিত পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি (নেছারাবাদ) উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল হক আনারশ প্রতীকে ৩৬ হাজার ৪ শত ১২ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মুইদুল ইসলাম মুহিদ মোটর সাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৩৫ হাজার ৬ শত ৩২ ভোট। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধীতা করেন।

মন্তব্য করুন