চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১১ জুন, ২০২৪, ০৪:৪৬ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

চাঁপাইনবাবগঞ্জে দুই লাখ পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৩ হাজার খামারে ১ লাখ ৮২ হাজার ১৬৭ টি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে । খামারিরা জানিয়েছেন, পশু খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় গরু পালনে খরচ অনেক বেড়েছে। তাই শেষ মুহূর্তে পশুদের খাবার হিসেবে কাঁচা ঘাস, খৈল, ভুট্টা এবং ধানের গুড়াসহ প্রাকৃতিক খাবার খাওয়াচ্ছেন। ইতোমধ্যে কোরবানির পশু বিক্রিও শুরু হয়েছে কিন্তু এবছরে জেলায় গরুর দাম একটু এখন পর্যন্ত কম হাকছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সদর উপজেলার নামোশংকরবাটি এলাকার খামারি মোঃ আমির আলী বলেন, আমার খামারে ৫০টি গরু ছিল, ইতোমধ্যে ৩০টি বিক্রি হয়ে গেছে। কোরবানির জন্য প্রাকৃতিক খাদ্য খাইয়ে দেশি জাতের গরু কোরবানির বাজারের বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছি।

তিনি বলেন, গরুগুলোকে প্রতিদিন দুবেলা প্রাকৃতিক খাদ্য, যেমন- ভুট্টা, খৈল, কাঁচা ঘাস, গমের ভুসি,ধানের গুড়া ও খড় খাওয়ানো হয়। দিনে কমপক্ষে দুই থেকে তিনবার বার গোসল করানো হয়। পশুর থাকার জায়গা সবসময় পরিষ্কার রাখাসহ সার্বক্ষণিক ফ্যান চালিয়ে পরিবেশ ঠান্ড রাখা হচ্ছে। সব মিলিয়ে গরু পালনে খরচ বেড়েছে অনেক। সে তুলনায় এবার দাম বেশি পাওয়া যাচ্ছে না।

গোমস্তাপুর উপজেলার গরু খামারি মণা ঠাকুর বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার গো-খাদ্যের দাম তুলনামুলকভাবে বেশি তাই সব মিলে একটি গরুর পেছনে যে ব্যয় হয় তা পুষিয়ে নিতে হিমশিম খেতে হবে।

তিনি বলেন, প্রতিবারই কোরবানির ঈদের সময় চোরাই পথে ভারতীয় গরু প্রবেশ করে। যার ফলে দেশীয় খামারিরা ক্ষতির সম্মুখীন হয়। আশা করছি এবারে তেমনটা হবে না।

বিজিবি-৫৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল গোলাম কিবরিয়া জানান, গরু চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবির জিরো টলারেন্স থাকবে। এছাড়া আমাদের সীমান্তবর্তী এলাকাসমূহে কাটা তারের বেড়া দেওয়া আছে।

ইতোমধ্যে আমরা টহল টিম জোরদার করেছি। জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এবার কোরবানির ঈদের জন্য জেলায় বাণিজ্যিক ও পারিবারিকভাবে ১ লাখ ৮২ হাজার ১৬৭টি পশু প্রস্তুত রয়েছে। এর মধ্যে গরু রয়েছে ১ লাখ ১হাজার
১১৭টি, ছাগল রয়েছে ৭০ হাজার ১৩১ টি এবং ভেড়া রয়েছে ১০ হাজার ৯১৯টি। জেলায় গরু, ছাগল ও ভেড়ার চাহিদা রয়েছে ১লাখ ২৯ হাজার ৯৫২টি।

জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোলাম মোস্তফা বলেন, আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ১ লাখ ৮২ হাজার ১৬৭টি কোরবানি যোগ্য পশু প্রস্তুত রয়েছে। যা জেলার চাহিদা মিটিয়ে জেলার বাইরেও ৫২হাজার ২১৫টি পশু বিক্রি করতে পারবেন খামারিরা।

তিনি বলেন, খামারিরা যেন প্রাকৃতিক উপায়ে গরু লালন পালন করতে পারেন সে বিষয়ে আমরা ইতোমধ্যে তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। জেলায় স্থানীয় ভাবে যে ১৭টি গরুর হাট রয়েছে তার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হাট হচ্ছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায়বটতলাহাট, শিবগঞ্জ উপজেলায় তর্তিপুর, রামচন্দ্রপুরহাট, কানসাট, বিনোদপুরে খাসেরহাট, মনাকষারহাট, আড়গাড়ারহাট, নাচোল উপজেলায় সোনাইচন্ডীরহাট, গোমস্তাপুর উপজেলায় রহনপুর গরুর হাট, ভোলাহাট উপজেলায় গোয়ালবাড়ীহাট, এছাড়া রয়েছে কিছু ছাগলের হাটও। হাটগুলোতে আমাদের
ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিম থাকবে বলে জানান জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকতা । আশা করছি আসন্ন কোরবানির ঈদে হাটে আসা ব্যবসায়ী ও খামারিরা নির্বিঘ্নে তাদের পশু বিক্রি করতে পারবেন।

মন্তব্য করুন