বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৩ জুন, ২০২৪, ০৩:৪৪ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

কোরবানীর চামড়ার মূল্য নির্ধারণ

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। ছবি সংগৃহীত

এবারের কোরবানির চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকায় লবন যুক্ত গরুর চামড়া - নুন্যতম ১২০০ টাকা এবং ঢাকার বাহিরে লবন যুক্ত গরুর চামড়া - নুন্যতম -১০০০ টাকা। আর খাসির লবনযুক্ত চামড়া প্রতি বর্গফুট - ২০ থেকে -২৫ টাকা। বকরি -১৮ থেকে ২০ টাকা।

আজ দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কোরবানির চামড়ার সঠিক ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনা বিষয়ক বৈঠকে ট্যানরি মালিকদের পক্ষ থেকে চামড়ার এই মূল্য নির্ধারণ করা হয়।

আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, প্রথমবারের মতো দেশে প্রতিপিস কোরবানির গরুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। সেটা একটা সাহসী পদক্ষেপ। এবার ঢাকায় একটি ফ্রেশ গরুর চামড়ার নূন্যতম দাম ১২০০ টাকা। ঢাকার বাইরে এক হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। 

এর আগে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু'র উপস্থিতিতে নতুন মূল্য ঘোষণা করেন বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদারগুডস এন্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মোহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন।

প্রতিপিস চামড়ার সর্বনিম্ন দাম নির্ধারণ করার বিষয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রান্তিক বিশেষ করে মফস্বল গ্রামে যারা কোরবানি দেন তারা চামড়ার সম্পর্কে তেমন ভালো জানেন না। যারা ঢাকা, ঢাকার আশেপাশে তাদের নলেজটা অনেক বেশি থাকে।অনেকে স্কয়ার ফিট বোঝেনা। ছোট যে গরু কোরবানি হয়, আমি উনাদের জিজ্ঞাসা করেছি ওনারা বলেছেন অনুমানিক ১৮ থেকে ২০ স্কয়ার ফিট চামড়া হয়। এবার আমরা প্রতি বর্গফুটের পাশাপাশি লবণযুক্ত ছোট প্রতিপিস চামড়ার সর্বনিম্ন দাম নির্ধারণ করতে বলেছি।

 প্রথমবারের মতো দেশে প্রতিপিস কোরবানির গরুরর চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। যে গরুর চামড়ার সর্বনিম্ন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ২০০ টাকা এবং ঢাকার বাহিরে ১ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, কোরবানি হলো একটি ত্যাগ। এটা কোনো ব্যবসা না। আমি মনে করি যে দামটা নির্ধারণ করা হলো। ঢাকায় সর্বনিন্ম একটি গরুর চামড়া ১২০০ টাকা  এবং ঢাকার বাইরে এক হাজার টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে সেটা একটা সাহসী পদক্ষেপ। আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দাম দেখেছি। এবার আর বর্গফুট মাপার কোন ঝামেলা থাকছে না। এবার একটি ফ্রেশ গরুর চামড়ার দাম নূন্যতম ১২০০ টাকা। 

চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হলেও সিন্ডিকেটের জন্য সে দামে চামড়া কেনা বেচা হয় না সে বিষয়ে কি পদক্ষেপ নিবেন এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এবিষয়টি সব সময় মনিটরিংয়ে রাখবে। এছাড়া বিভিন্ন এজেন্সির লোক এখানে কাজ করে। এটার ওপর সরকারের ভাবমূর্তি নির্ভর করে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো আজকে যে মূল্য বা দাম নির্ধারন করা হলো সেটার নিচে যেন বাংলাদেশের কোথাও চামড়া বিক্রি না হয়৷ সে বিষয়টি আমরা নজরে রাখবো। 

এবছর লবণের উৎপাদন ভালো রয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয় জানিয়েছে এবছর লবণের উৎপাদন খুব বা অত্যন্ত ভালো হয়েছে। এছাড়া টেনারি ও চামড়া ব্যবসায়ীসহ ইসলামী ফাউন্ডেশনের সাথে যেয়ে ক্ষুদবা দেয়ার ব্যবস্থা করবো। আমাদের বিপিসি আছে তাদের মাধ্যমে মাদ্রাসার যে ছাত্ররা কোরবানি দেয় তাদের পশু কোরবানি থেকে চামড়া ছাড়ানো ও সংরক্ষণ পর্যন্ত আমাদের একটি প্রশিক্ষন চলছে এবং চলতে থাকবে৷  

এবছর চামড়া কেনা বেচা মসজিদ মাদ্রাসা ভিত্তিক করার পরামর্শ দিয়ে আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, যাতে লবণ দিয়ে সহজে চামড়াটা সংরক্ষণ করতে পারি। যেহেতু এটা একটি ত্যাগের জিনিস সকলের মন মানসিকতা যদি একই রকম থাকে তাহলে আমার মনে হয়, চামড়া নিয়ে এবছর কোনো বিতর্ক হবে। সবাই ধর্মীয় চিন্তাভাবনা থেকে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ব্যবসায়ীক দিক থেকে কোনো সিদ্ধান্ত নেই নি। আমরা মনে করেছি চামড়া সরকারের সম্পদ, সেটা সংরক্ষণ করা দরকার।

ব্যাংক লোন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি বলেন, ব্যাংক ঋণের বিষয় মূলত ব্যাংক এবং গ্রাহকের সমঝতার ভিত্তিতে হয়ে থাকে। ব্যাংক যাকে যোগ্য মনে করবে সে গ্রাহক ঋণ পাবে। তবে আমরা হত কয়েক বছর ধরে ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে একটি লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে থাকি যে কোরবানি ঈদে তারা কতো টাকা ঋণ বিতরণ করতে পারবে এবং প্রস্তুতি কতোটা আছে। কয়েকটি ব্যাংক বলেছে তারা প্রস্তুতি নিয়ছে আবার কয়েকটি ব্যাংক বলেছে যদি ভালো গ্রাহক পায় তাহলে তারা ঋণ দেবে। মোটামুটি ২০২৪ সালে ২৭৬ কোটি টাকা ঋণ বিতরনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে৷ 

এসময় বাণিজ্য সচিব মো. সেলিম উদ্দিন, বাংলাদেশ ট্যানারি এসোসিয়েশন চেয়ারম্যান শাহিন আহমেদ, বাংলাদেশ ফিনিসড লেদার, লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিনসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন। 

মন্তব্য করুন