বান্দরবান প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৩ এপ্রিল, ২০২৪, ০১:০৩ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

বান্দরবানে ব্যাংক ডাকাতি; ম্যানেজার অপহরণ

ছবি সংগৃহীত

বান্দরবানের রুমায় রাতে সোনালী ব্যাংকে ডাকাতি করে অর্থলুট করার অভিযোগ উঠেছে কুকি-চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট কে এনএফ বিরুদ্ধে। এছাড়াও স্থানীয়দেরকে মারধরের পাশাপাশি ব্যাংকের ম্যানেজারকে অপহরণ করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাত নয়টার দিকে রুমা সদর ইউনিয়নে এই ঘটনাটি ঘটে। 

সত্যতা নিশ্চিত করেছেন রুমা উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা দিদারুল আলম। তিনি জানান, রাতে বেশ কয়েকজন অস্ত্রধারী এসে ব্যাংক ডাকাতি করে লুট করে নিয়ে গেছে। তবে কে বা কোন সংগঠন নিয়ে গেছে সে ব্যাপারে জানা যায়নি।

স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, রাত সাড়ে আটটার দিকে হঠাৎ করে উপজেলায় বিদ্যুৎ চলে যায়। এসময় সড়ক পথে ড্রেস পড়া প্রায় ৫০ জন অস্ত্রধারী ব্যাংকের আশাপাশে অবস্থান নেয়।  ব্যাংকের সংলগ্ন একটি মসজিদের তারাবী নামাজ আদায় করছিল কয়েকজন মুসল্লীরা। পরে তাদেরকেও জিম্মি করে ব্যাংকে হানা দেয় সন্ত্রাসীরা। ব্যাংকের ভিতরে গিয়ে প্রায় ১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা অর্থ লুট করে নিয়ে যায়। যাওয়ার পথে সাধারণ মানুষদের মারধরের পাশাপাশি মোবাইল ছিনটাইসহ সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার মো, নিজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায় অস্ত্রধারীরা। প্রায় ঘন্টা খানিকে পর বিদ্যুৎ আসলে এলাকার স্থানীয়দের মাঝে  হৈচৈ শুরু হয়। পরে চা্রিদিকে এলাকাবসীদের ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক।

আইনশৃঙ্খলা সূত্রে জানা যায়, ডাকাতির পর ব্যাংকের টহলরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাছ থেকে এসএমজি ২টি, শটগান ৪টি,রাইফেল ৮টিসহ মোট ৪১৫টি গুলির রাউন্ড লুট করে নিয়ে যান অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা। তবে সেসব জিনিস উদ্ধারের জন্য কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরা।

জানা গেছে, মঙ্গলবার চাকরিজীবীদের ঈদের বেতন ও বোনাসের টাকা ব্যাংকে নিয়ে যাওয়া হয়। সন্ধায় পর বেতন বোনাসের টাকা হিসেব করছিলো ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। পরে ব্যাংকের বিপরীত মসজিদে তারাবী নামাজ পড়তে চলে যান ব্যাংক ম্যানেজার মো,নিজাম উদ্দিন। পরে  নামাজ শেষে ব্যাংক ম্যানেজারসহ সকল কর্মচারী ও টহলরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীদের জিম্মি করে ব্যাংকের ডাকাতি শুরু করে। সবশেষে ডাকাতির পর ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণ করে নিয়ে যায় কেএনএফ।

নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক মসজিদের নামাজ আদায়ী এক ব্যাক্তি বলেন, আমরা ৮টা ১৫ মিনিটে নামাজ শুরু করি।এরশারে নামাজ দুই রেখা পরার সময় অস্ত্রধারীরা মসজিদে ঢুকে। পরে নামাজ শেষ করা পর আমাদেরকে জিম্মি করে চুপচাপ থাকতে বলে। তবে আশেপাশে যেসব সিসি ক্যামেরা ছিল সব ভেঙ্গে ফেলেছে সন্ত্রাসীরা।

পরিহিত পোশাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি নিশ্চিত হয়ে বলেন, তারা সবাই বম সম্প্রদায়ের কুকি-চীন সদস্য। তাদের পরনের কাপড় ছিল সেনাবাহিনী কালারে। 

বান্দরবান সোনালী ব্যাংকের ডেপুটি জেনারেল ম্যনেজার আতাউল গণি বলেন, রাতে ব্যাংকের ডাকাতি হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। সেই সাথে ব্যাংক ম্যানেজারকেও অপহরণ করে নিয়ে গেছে বলে খবর পেয়েছি। তবে ব্যাংকের কত পরিমান টাকা লেনদেন হয়েছে ও কি পরিমান লুট করে নিয়ে গেছে সে ব্যাপারে সঠিক বলতে পারছি নাহ।

রুমা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শাহজাহান বলেন, রাতে কয়েকজন অস্ত্রধারী এসে ব্যাংকের ডাকাতি করে নিয়ে গেছে। সেই সাথে ব্যাংকের ম্যানেজার অপহরণের পাশাপাশি টহলরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ১৪টি অস্ত্র ও কয়েকশত রাউন্ড গুলি নিয়ে গেছে। এই ঘটনাটি পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তা জোরদার বাড়ানো হয়েছে।

মন্তব্য করুন