রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৩১ মে, ২০২৪, ০৩:১৩ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

রেমাল তান্ডবে সাতক্ষীরার উপকূলে বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ঘূর্ণিঝড় রেমাল দীর্ঘ ছয় ঘণ্টাব্যাপী তাণ্ডব চালিয়ে সাতক্ষীরা উপকূল অতিক্রম করে। তার তান্ডবের এ পুরো সময়টাই তীব্র জলোচ্ছ্বাসের সঙ্গে যুদ্ধ করেছে উপকূলের জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধ। এতে বেড়িবাঁধ গুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

গত কয়েক দশকে ঘটে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় গুলোর মধ্যে রেমাল অন্যতম। এ ঘূর্ণিঝড় এতো বেশিসময় ধরে উপকূলে তাণ্ডব চালিয়েছে, যা আগে কোনো ঝড়ের ক্ষেত্রে ঘটেনি।

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে নদ-নদীতে ৫ থেকে ৭ ফুট পানি বাড়লেও স্থানীয়দের প্রচেষ্টায় প্লাবন থেকে রক্ষা পেয়েছে গ্রামের পর গ্রাম।প্রচণ্ড ঝড়ের মধ্যেও স্থানীয়রা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদীর বেড়িবাঁধের ওপর মাটির আইল দিয়ে জোয়ারের পানি বাঁধ উপচে লোকালয়ে প্রবেশের পথ বন্ধ করে দেওয়ায় বেঁচে গেছে গ্রামের পর গ্রাম ও হাজারো মৎস্য ঘের।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, ঘূর্ণিঝড় রেমালে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ ও ২ এর আওতাধীন ৬৭৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে প্রায় ২৩ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, গত ২৬ মে রাতে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা ধরে ধ্বংসযজ্ঞ চালায় ঘূর্ণিঝড় রেমাল। ফুঁসে ওঠা নদীর গর্জন করা ঢেউ আঁচড়ে পড়েছে উপকূল রক্ষা বাঁধে। এতে ক্ষতবিক্ষত হয়েছে সাতক্ষীরার উপকূল রক্ষা বাঁধ। দুর্বল হওয়ার পরও উপকূলীয় এলাকায় সোমবার (২৭ মে) ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাব ছিল লক্ষণীয়। ফাটল-জলোচ্ছ্বাসের কারণে বাঁধের কঙ্কাল দশা সৃষ্টি হয়েছে।

শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর ইউনিয়নের পাতাখালী এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মাওলানা আব্দুল মাজেদ, আবু তাহের, মোক্তার হোসেন, মাসুম বিল্লাহসহ একাধিকরা বলেন, শুধু ঘূর্ণিঝড় রেমাল নয় প্রতিবারই এমন পরিস্থিতিতে কর্তা ব্যক্তিরা শুধু আশ্বাসের বুলি আওড়ান। শোনান নানা ধরনের মেগা প্রকল্পের গল্প। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আমাদের এই অঞ্চলে এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। উপকূলের মানুষকে বাঁচাতে টেকসই বেড়িবাঁধের বিকল্প নেই।

তারা আরও বলেন, টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে ব্যর্থ হলে সাতক্ষীরা উপকূলীয় অঞ্চলকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে স্থানীয়দের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিন। আমরা বারবার নয়, একবারই মরতে চাই।

শ্যামনগর পদ্মাপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাহানারা খানম বলেন, পূর্ব পাতাখালি, পশ্চিম পাতাখালি, কামালকাঠি ও খুটিকাটা এলাকার বাঁধ আগে থেকেই জরাজীর্ণ ছিল। রিমালের তাণ্ডবে কপোতাক্ষ ও খোলপেটুয়া নদীর প্রবল স্রোতে ১০-১২ ফুট চওড়া বাঁধটি ভেঙে এখন মাত্র দেড় থেকে দুই ফুট অবশিষ্ট রয়েছে।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো-১) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালে তার আওতাধীন ৩৮০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে প্রায় ১০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো-২) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, তার আওতাধীন ২৯৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে প্রায় ১৩ ‌‌কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির তথ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। 

মন্তব্য করুন