রাবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১ জুলাই, ২০২৪, ০৯:১১ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

কোটা পদ্ধতি পুনর্বহাল বাতিলের দাবিতে রাবি শিক্ষার্থীদের ফের মানববন্ধন

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি পুনর্বহালের প্রতিবাদ ও সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে তৃতীয় বারের মত মানববন্ধন করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (১ জুলাই)  বেলা ১১ থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে এই আন্দোলন কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।

এ সময় তাঁরা 'কোটা প্রথায় নিয়োগ পেলে দুর্নীতি বাড়ে প্রশাসনে', 'মেধাবীদের যাচাই করো কোটা পদ্ধতি বাতিল করো', '১৮ এর হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার', 'দেশটা নয় পাকিস্তান কোটার হোক অবসান', 'কোটা বৈষম্য নিপাত যাক মেধাবীরা মুক্তি পাক' ইত্যাদি লেখা সংবলিত প্লাকার্ড প্রদর্শন করেন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা কোটা পুনর্বহাল বাতিল, সব কোটার পরিমাণ ১০ শতাংশের নিচে কমিয়ে আনা, একজন কোটা সুবিধা ভোগ কারী সরকারি চাকরি বা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় শুধু একবার কোটা সুবিধা নেয়া এবং পৌষ্য কোটা সম্পূর্ণ বাতিলের দাবিসহ বিভিন্ন দাবি উল্লেখ করেন।

আন্দোলনে অংশ নিয়ে পপুলেশন সায়েন্স এন্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী আমানুল্লাহ খান বলেন, কোটা সম্পূর্ণ বাতিল চাওয়া আমাদের দাবি নয়। এদেশের স্বাধীনতায় মুক্তিযুদ্ধাদের অবদান অতুলনীয়। কিন্তু তাই বলে সংখ্যা লঘু সেই গোষ্ঠীর জন্য বৃহৎপরিমান কোটা রাখার কোনো মানেই হয় না। একজন কোটা সুবিধা ভোগ কারী বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা থেকে শুরু করে চাকরি পরীক্ষা পর্যন্ত কোটার সুবিধা নিয়ে থাকে। এমনকি কোটার সাহায্যে নিম্ন গ্রেডে চাকরি নিয়ে আবার উচ্চ গ্রেডে চাকরি নেয়ার সুযোগও তাঁরা লুফে নেয়। এরকম বার বার কোটা সুবিধা ভোগ করার ফলে আমাদের মতো কোটাহীন শিক্ষার্থীরা সর্বক্ষেত্রেই তাঁদের থেকে পিছিয়ে থাকে। আমাদের দাবি এই কোটা শতাংশের পরিমাণ সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ করা হোক।

সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী সজীব বলেন, কোটা হচ্ছে একটি বৈষম্যমূলক প্রথা। বতর্মানে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরে এসেও কোটা পদ্ধতির মতো একটি বৈষম্য মূলক প্রথা চলতে পারে না। সরকার পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে যারা ইতিমধ্যে সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে  তাদেরকে আরো বেশি সুযোগ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আগামী ৪ তারিখে রায়ে ২০১৮ সালের পরিপত্রকে পুনর্বহাল করা হোক। এছাড়াও ২০১৮ সালের পরিপত্রকে পুনর্বহাল করে একটি কমিশন গঠন করে ৫৬  শতাংশ কোটা কমিয়ে সর্বোচ্চ ১০% করা হোক। আর একজন শিক্ষার্থী  তার জীবদ্দশায় একবারই কোটা ব্যবহার করতে পারবে এমন নিয়ম করা হোক।

এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্স এন্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান মারুফ। তিনি বলেন, আমরা ২০১৮ সালে বলেছিলাম কোটা পদ্ধতি সংস্কার চাই, প্রধানমন্ত্রী সংসদে  বলেন কোটা পদ্ধতি সংস্কার হবে না, কোটা  বাতিল করে দিলাম। আমরা স্পষ্ট বলতে চাই এবার কোনো আশ্বাস না, আমরা এবার কোটা পদ্ধতি সংস্করণ চাই। রাষ্ট্র মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সুযোগ সুবিধা দিক তাতে আমাদের সমস্যা নেই, কিন্তু একটি রাষ্ট্রে  ৫৬ শতাংশ কোটা দেওয়া এটি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।

আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী আশিকুল্লাহ মহিবের সঞ্চালনায় এই সময় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। এর আগে গত জুন মাসের ৬ তারিখে প্রথম ও গতকাল ৩০জুন মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।

মন্তব্য করুন