বগুড়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২১ মে, ২০২৪, ১০:১১ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

একযুগ বিনা টিকেটে ট্রেন ভ্রমণ, একদিনেই টাকা পরিশোধ

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

১৯৭০ সাল থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত বিনা টিকেটে টানা একযুগ ট্রেনে নিয়মিত যাতায়াত করতেন বেলাল উদ্দিন নামের ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি। জীবনের অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে এসে অনুশোচনায় ভুগছেন। একদিনেই সব টাকা পরিশোধ করেছেন ৬৪ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি।

মঙ্গলবার (২১ মে) দুপুরে বগুড়া রেলওয়ের স্টেশন মাস্টারের কাছে গিয়ে বিনা টিকিট ট্রেন ভ্রমণের বিষয়টি জানিয়ে হিসেব নিকেশ করে বকেয়া ৭ হাজার টাকা জমা দেন বেলাল উদ্দিন। তিনি বগুড়ার বিভিন্ন উপজেলায় এলজিইডির উপ-সহকারি প্রকৌশলী হিসেবে চাকুরি করেছেন। সবশেষ কাহালু উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। সেখান থেকেই ২০২০ সালে অবসরে যান। 

বেলাল সোনাতলা উপজেলার বাসিন্দা। চাকুরি জীবনের আগে প্রায় ১২ বছর সোনাতলা থেকে বগুড়া শহরে ট্রেনে ভ্রমণ করেছেন। ট্রেনে যাতায়াতের অধিকাংশ সময় টিকেট ছাড়াই যাতায়াত করেন। তিনি বগুড়া পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে পড়াশোনা করেছেন। সপ্তাহে বা মাসে দুই এক-বার যাতায়াত করতে হয়েছে। 

জীবনের অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে এসে একযুগের বিনা টিকেটে ট্রেনে ভ্রমণের কারণে অনুশোচনায় ভুগছেন উল্লেখ করে বেলাল উদ্দিন জানান, আত্মীয় স্বজনের বাড়ি বগুড়ায় হওয়ায় তার নিয়মিত যাতায়াত ছিল। ওই সময়গুলোতে বিনা টিকেটেই ট্রেনে যাতায়াত করেছি। সময়টাকে স্বাভাবিক হিসেবেই মনে করতাম। কিন্তু বর্তমানে বিষয়টি আমাকে পীড়া দিচ্ছিলো। 

তিনি বলেন, আমাদের মসজিদের ইমাম সাহেবের কাছে গিয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করলে তিনি বকেয়া টাকা টিকেটের মাধ্যমে পরিশোধ করার পরামর্শ দেন। যাতে সরকারের কোষাগারে যায়। এরপর নিজে গিয়ে সব হিসেব করে ৭ হাজার টাকা জমা দিয়েছি। মূলত আখিরাতের ভয় থেকেই আমি এই টাকা পরিশোধ করেছি। কারণ মৃত্যুর পর অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। বিনা টিকেটে ট্রেন ভ্রমণের টাকা জমা দিতে পেরে খুব ভালো লাগছে বলছিলেন বেলাল। 

এ ব্যাপারে বগুড়া রেলওয়ের স্টেশন মাস্টার সাজেদুর রহমান সাজু বলেন, বেলাল উদ্দিনের জমা দেয়া টাকা সরকারি কোষাগারে যাবে। ট্রেন আমাদের জাতীয় সম্পদ। অনেকেই বিনা টিকেটে ট্রেনে ভ্রমণ করে থাকেন। এটা কোনভাবেই উচিত না। মাঝে মধ্যে অনেকে বিবেকের তাড়নায় টাকা পরিশোধ করে যান। 

মন্তব্য করুন