বাগেরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৩ জুন, ২০২৪, ০৬:২৪ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

ঘূর্ণিঝড় রেমালে সুন্দরবনে মৃত হরিণের সংখ্যা বেড়ে ১৩৮

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে সুন্দরবনে মৃত প্রাণীর সংখ্যা বাড়ছে। সুন্দরবনের বিভিন্ন স্থান থেকে আজ মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ১৩৮ টি হরিণের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে বন বিভাগ।

বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ৪টি শূকরসহ এ পর্যন্ত সুন্দরবন থেকে ১৩৮টি বন্য প্রাণী হরিণের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া জীবিত ১৮টি হরিণ ও একটি অজগর সাপ উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বনে অবমুক্ত করা হয়েছে।

খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দে বলেন, আজ সকাল পর্যন্ত উদ্ধার হওয়া মৃত বন্য প্রাণীগুলো মূলত সুন্দরবনের কটকা, কচিখালী, দুবলা, নীলকমল, আলোরকোল, ডিমের চর, পক্ষীর চর, জ্ঞানপাড়া, শেলার চর এবং বিভিন্ন নদী ও খালে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া গেছে। মৃত প্রাণীগুলোকে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ভেসে আসা হরিণ ও অজগরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

সুন্দরবনের কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা নির্মল কুমার মন্ডল বলেন, চাকরিজীবনে সুন্দরবনে বেশ কয়েকটি ঝড়-জলোচ্ছ্বাস দেখেছি। কিন্তু এত বেশি পানি আগে কখনো দেখিনি। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে অন্তত ৫ থেকে ৭ ফুট পানি বেশি হয়েছিল আমার এলাকায়। সাগর উপকূলে দুবলা, কটকা ও কচিখালী এলাকায় পানি আরও কয়েক ফুট বেশি হয়েছিল। ৩৬ ঘণ্টা পর বন থেকে পানি নেমেছে। পানি নামার গতি এবং তীব্র জলোচ্ছ্বাসে সাধারণ প্রাণী ভেসে যাওয়া স্বাভাবিক।

সুন্দরবনের অভ্যন্তরে থাকা বন বিভাগের একাধিক কর্মচারী বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালে অনেক পাখি মারা গেছে। ঝড়ের পর আর আগের মতো পাখির দেখা মিলছে না, শোনা যাচ্ছে না কিচিরমিচির শব্দ, তবে জোয়ারের পানি সুন্দরবনের গহিনে উঠে যাওয়ায় হরিণগুলো সাঁতরে কূলে উঠতে না পেরে মারা গেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। বনের অবকাঠামো বিধ্বস্ত হয়ে যাওয়াসহ অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক পরিমাণ ৬ কোটি ২৭ লাখ টাকার ওপরে হবে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি ও উড টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ওয়াসিউল ইসলাম বলেন, যদি সুন্দরবনকে বিরক্ত না করে তাকে তার মতো থাকতে দেওয়া যায়, তাহলে সে নিজে নিজেই তার প্রাকৃতিক বাস্তুতন্ত্রের ভেতর দিয়ে আগের অবস্থানে ফিরে যাবে। যুগ যুগ ধরে এ রকম ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে নিজে নিজেই সে সুস্থ হয়ে উঠেছে। 

মন্তব্য করুন