রাঙামাটি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২০ জুন, ২০২৪, ১১:৪০ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

সাজেকের বাঘাইহাটে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা সাজেক ইউনিয়নের বাঘাইহাট বাজারের পরিস্থিতি আঞ্চলিক দল ও গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের পর এখনো থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

ঘটনার পর ভয় ও আতংকে কেউ বাজারে যাচ্ছে না। ঘটনার প্রতিবাদ ও গুলিতে নিহত বাস শ্রমিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে গঙ্গারাম বাজার এলাকায় মানববন্ধন করা হয়েছে। এঘটনায় এখনো মামলা হয়নি বলে থানা সূত্রে জানা গেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার বেলা আড়াই টার দিকে জনসংহতি সমিতি-এমএন লারমা-গণতান্ত্রিক ইউপিডিএফ ও গ্রামবাসীর মধ্যে সংর্ঘষ হয়। এঘটনায় শান্তি পরিবহণের বাস শ্রমিকের মৃত্যু হয়। এরপর থেকে বাঘাইহাট বাজারে আতঙ্ক ও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।


গত বুধবার সকাল থেকে কিছু কিছু দোকানপাত খুললেও তেমন কোনো মানুষ বাজারে আসেননি। ভয়ে সাধারণ মানুষ ও যানবাহন চলাচল করছে না। বাঘাইহাট বাজার থেকে তিন কিলোমিটার দূরে গঙ্গারামমূল এলাকায় উজো বাজারে গত মঙ্গলবার হাটের দিন ছিল। কিন্তু সংঘর্ষের ঘটনার কারণে সে দিন বাজার মিলছে না।

সেখানে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনার প্রতিবাদ ও গুলিতে নিহত বাস শ্রমিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে গঙ্গারাম বাজার এলাকায় মানববন্ধন করা হয়েছে। ছয় থেকে আট শতাধিক গ্রামবাসী মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করে বলে জানা গেছে।


উল্লেখ্য, ওই ঘটনার পর বাঘাইহাট বাজারে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। দীর্ঘদিন ধরে সাজেক ইউনিয়নে বাঘাইহাট বাজারে জনসংহতি সমিতি (এমএন লারমা) ও ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক দলের ৩০ থেকে ৪০ জনের একটি সশস্ত্র গ্রুপ অবস্থান করছেন।

গত কয়েক দিন বাজার নিয়ন্ত্রণ ও সাজেক ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ ও হয়রানির অভিযোগ করেন। গত মঙ্গলবার সকালে সাত শতাধিক গ্রামবাসী বাঘাইহাট বাজারে এসে অবস্থান করে। পরে জনসংহতি সমিতি (এমএন লারমা) ও ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক দলের সদস্যদের খুঁজতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁদের তেড়ে  যাওয়ার সময় বাঘাইহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে এ্যালোপাতাড়ি ব্রাশফায়ার করা হয়।

এসময় বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে শান্তিপরিবহণের শ্রমিক মোঃ নাঈমের (৩৫) মৃত্যু হয়। তাঁকে উদ্ধার করে মোটরসাইকেল যোগে দীঘিনালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্বত্যরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। এঘটনায় আরও তিন আহত হন।

তাঁরা হলেন, দুলেই চাকমা (২৫), চিক্কো মনি চাকমা (৩০) ও সোনামনি চাকমা (২৮)। এই ঘটনার পর বাঘাইহাট বাজার ও আশ-পাশের এলাকা থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে বলে জানা গেছে।


বাঘাইহাট বাজারের ব্যবসায়ি মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, ঘটনার পর বাজারে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বৃহস্পতিবার সকাল কিছু দোকানপাত খুললেও কোনো পাহাড়ি-বাঙালি কেউ বাজারে আসেনি।ভয়ে যানবাহন চলাচলও তেমন করছে না।


সাজেক ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য পরিচয় চাকমা বলেন, সাধারণ মানুষর ওপর গুলিবর্ষণ ও বাস শ্রমিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে গঙ্গারাম বাজার এলাকায় মানববন্ধন করা হয়েছে। সকাল ১০টা পর্যন্ত ছয় শতাধিক মানুষ জুড়ো হয়েছে। আরও বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ আসছেন। বুধবারে উজো বাজারে হাটের দিন সংর্ঘষ ঘটনার কারণে হাট মিলছে না।


সাজেক থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আবুল হোসেন বলেন, নিহত ব্যক্তিকে ময়নাতদন্তের জন্য খাগড়াছড়ি জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এঘটনায় এখনো পর্যন্ত মামলা হয়নি,মামলার প্রক্রিয়া চলছে।

মন্তব্য করুন