সোনারগাঁও (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৯ জুন, ২০২৪, ০৮:৩৯ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

সোনারগাঁয়ে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী যুবতীকে ধর্ষণ, ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

মেঘনা নদীর তীর ঘেঁষা নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের একমাত্র চরাঞ্চল নুনেরটেক। ওই এলাকায় আছিয়া (২৭) নামের এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী যুবতীকে একাধিকবার ধর্ষণ করে ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা করার অভিযোগ ওঠেছে একই এলাকার কামাল হোসেন (৪০) নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ধর্ষিতার বাবা অসহায় এক জেলে। স্থানীয় প্রভাব বিস্তার  হওয়ায় থানায় লিখিত অভিযোগ না দেওয়ায় কোনো আইনি ব্যবস্থাও নেয়নি পুলিশ। অভিযুক্ত ধর্ষক কামাল উপজেলার চরাঞ্চল নুনেরটেক এলাকার পশ্চিমপাড়া ডিয়ারা গ্রামের মৃত কাবিল হোসেনের ছেলে।


স্থানীয় ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বুদ্ধি প্রতিবন্ধী আছিয়া এক অসহায় পরিবারের সন্তান। ছোটবেলায় তার মা মারা যায়। বাবা একজন জেলে। নানীর বাড়িতেই সে বড় হয়। বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হওয়ায় পাশের বাড়ির মৃত কাবিল মিয়ার ছেলে কামাল গত ৩ বছর পূর্বে একাধিকবার ধর্ষণ করে অন্তঃসত্ত্বা করলে স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে উপজেলার স্থানীয় একটি হাসপাতালে গর্ভপাত করায়। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হওয়ায় আবার এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। যার ফল-স্বরুপ এবার ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে ভুক্তভোগী বুদ্ধি প্রতিবন্ধী আছিয়া ও তার পরিবার।  


ভুক্তভোগী বুদ্ধি প্রতিবন্ধী আছিয়া বলেন, তার বাবা ও ভাই রাতে বাসায় না থাকার সুযোগে বাসায় ঢুকে তাকে মুখ চেপে ধরে একাধিকবার ধর্ষণ করে, এর আগে ২ বার অন্তঃসত্ত্বা করেন। দু'বারই স্থানীয়দের প্রভাবের কারণে অভিযুক্ত কামাল ও তার বউ উপজেলার একটি বেসরকারি হাসপাতালে গর্ভপাত করায়। এবার একই ভাবে তাকে ঘরে একা পেয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে কামাল হোসেন। যার ফলে সে এখন ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। 


ভুক্তভোগীর ছোট ভাই ওয়াসীম জানান, পরিবারের স্বচ্ছলতার জন্য সে এবং তার বাবা প্রতি রাতে নদীতে মাছ ধরতে যায়। এ সুযোগে পাশের বাড়ির  মৃত কাবিল মিয়ার ছেলে কামাল তার বোনকে এর আগেও একাধিকবার ধর্ষণ করে অন্তঃসত্ত্বা করে। কিন্তু স্থানীয়দের প্রভাবের কারনে তাদের হুমকি প্রদান করে গোপনে গর্ভপাত করায়।  পরে আবার এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে তার বোনকে এবার ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা করে সেই ধর্ষণকারী কামাল।


তিনি আরও জানান, যেহেতু তারা (ভুক্তভোগী) নানীর বাসায় থাকে সেহেতু স্থানীয়দের প্রভাবের কারনে তারা এলাকায় তার বোনকে নিয়ে মামার বাসায় মানবেতর জীবনযাপন করছে। এঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন ও প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিগোচর করে সুষ্ঠু বিচারের দাবী জানান তিনি।


ভুক্তভোগীর ভাবী জানান, মেয়েটি বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অসহায় পরিবারের হওয়ায় এলাকার স্থানীয় ব্যক্তিরা তাদের কোনো সহযোগিতা করছে না। তারা ধর্ষনকারী কামালের পক্ষ নিয়ে বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। তারা এখন অসহায় মেয়েটিকে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।


অভিযুক্ত ধর্ষক কামাল হোসেন বলেন, আমি একজন জেলে। আমার উপর আনিত ধর্ষণের বিষয়টি মিথ্যা ও বানোয়াট। আমি এ অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত না।

সোনারগাঁ থানার তদন্ত (ওসি) মহসিন মিয়া জানান, এ বিষয়ে থানায় এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।  

মন্তব্য করুন