রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ০৯:১১ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

আমেরিকা থেকে গাঁজার তৈরি কেক-চকলেট আনতেন তারা

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বাংলাদেশ ডাক বিভাগের বৈদেশিক ডাক শাখার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্য থেকে একটি পার্সেলে আসা প্রায় কোটি টাকা মূল্যের বিপুল পরিমাণ টেট্রাহাইড্রো ক্যানাবিনল যুক্ত কুশ এবং গাঁজার তৈরি চকলেট ও কেক উদ্ধার করেছে  মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। এ ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ডিএনসি কার্যালয়ে গতকাল মঙ্গলবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়। গ্রেপ্তাররা হলেন সিরাজগঞ্জের কাজিপুর থানার দুর্গাপুর গ্রামের মোঃ দুলাল মিয়ার ছেলে মোঃ রাসেল মিয়া (২০) , কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার মো. রিপন মিয়ার ছেলে রমজান মিয়া (২১) ও নীলফামারীর সৈয়দপুর থানার গোলাহাটি গ্রামের মো. শাকিলের ছেলে মোঃ ইমরান ওরফে রাজ (২০)।

সংবাদ সম্মেলনে ডিএনসি কর্মকর্তারা জানিয়েছে, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি চৌকস টিম গত রোববার অভিযান চালিয়ে পল্টন মডেল থানাধীন পুরাতন ডাক ভবন বৈদেশিক ডাকের সিইডি/ডিসিএল শাখায় আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া থেকে আসা একটি পার্সেল হতে প্রায় কোটি টাকা মূল্যের বিপুল পরিমাণ টেট্রাহাইড্রো ক্যানাবিনল যুক্ত কুশ, ক্যানাবিস চকলেট ও ক্যানাবিস কেক জব্দ করে। ওই পার্সেলে একটি কার্টুনের ভিতর ৬টি পলি প্যাকেটে টেট্রাহাইড্রোক্যানাবিনলযুক্ত কুশ (আমেরিকার তৈরী) প্রতি পলি প্যাকেটে ২২৫ গ্রাম করে ১ কেজি ৩৫০ গ্রাম ভয়ংকর মাদক ছিলো। একই কার্টুনের ভিতর আমেরিকার তৈরী গাঁজার চকলেট ৯ টি, প্রতিটি ২৮ গ্রাম করে সর্বমোট ২৫২ গ্রাম ও  গাঁজার কেক ১০টি; প্রতিটি ৬০  গ্রাম করে ৬০০ গ্রাম মাদক জব্দ করা হয়। জব্দকৃত মাদকের আনুমানিক মূল্য কোটি টাকা।

চক্রটিকে যেভাবে গ্রেপ্তার করা হয়

উপপরিচালক মো. আবুল হোসেন বলেন, পার্সেলে থাকা মোবাইল নম্বর ধরে প্রযুক্তির সহায়তায় আশুলিয়ার কাঠগড়া বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রথমে রাসেল মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, পার্সেলটি তিনি ডেলিভারি নেবেন। পরে তার কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে রিসিভ করার কথা ছিল রমজান মিয়ার। পরে আশুলিয়ার আমতলা এলাকা থেকে রমজানকে গ্রেপ্তার করা হয়। রমজানক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তাকে টাকার বিনিময়ে পার্সেলটি রিসিভ করতে বলেন মো. ইমরান ওরফে রাজ। এরপর আমতলা থেকেই গ্রেপ্তার করা হয় রাজকে। তারা দুই জন বন্ধু। তিনি আরও বলেন, যে প্যাকেটে করে মাদকগুলো আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে এসেছিল সেগুলো ছিল বাচ্চাদের খেলনার প্যাকেট। এটা করার কারণ যাতে করে কেউ বুঝতে না পারে এসব প্যাকেটে মাদক রয়েছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে এভাবে বিদেশ থেকে গাঁজার কেক, কুশ ও চকলেট এনে রাজধানীরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করে আসছিল।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিজি বলেন, ক্যালিফোর্নিয়ায় এ মাদক বৈধ কিংবা অবৈধ সেটি বিষয় না। বাংলাদেশে এই মাদক অবৈধ, তাই বাংলাদেশে এই মাদক পাঠানো আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। বাংলাদেশে এটা অবৈধ জেনেই তারা বাচ্চাদের খেলনার প্যাকেটে মাদক পাঠিয়েছে। এই পার্সেলটি যে কোনও আমেরিকান নাগরিক পাঠিয়েছেন বিষয়টি এমন নয়। ওখানে বসবাসরত অন্য কোনও দেশের নাগরিকও পাঠাতে পারেন।

তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ (সংশোধিত ২০২০) মোতাবেক সংশিস্নষ্ট থানায় মামলা দায়ের পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

 

মন্তব্য করুন