কক্সবাজার ব্যূুরো

প্রকাশিত: ২৮ জুন, ২০২৪, ০৮:৪১ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

উগ্রবাদী বই, লিফলেট ও বিস্ফোরক তৈরীর ম্যানুয়াল উদ্ধার

নিষিদ্ধ আনসার আল ইসলামের তিন সদস্য কক্সবাজারে গ্রেপ্তার

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্য সন্দেহে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব- ৭ ও ১৫)। বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) মধ্যরাতে কক্সবাজার সদরের চৌফদন্ডী এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার তিন ব্যক্তি হলেন, মোঃ জাকারিয়া মন্ডল (১৯),মোঃ নিয়ামত উল্লাহ (২১) ও  ওজায়ের (১৯)। তাদের মধ্যে একজনের বাড়ী জামালপুর ও অপর দুইজন ফেনি ও বোরহান উদ্দিন এলাকায়। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়ে উগ্রবাদী বই, লিফলেট ও বিস্ফোরক তৈরীর ম্যানুয়াল।

কক্সবাজার র‌্যাব-১৫ এর কার্যালয়ে শুক্রবার (২৮ জুন) দুপুরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম।

আজ ২৮ জুন শুক্রবার সকাল ১১টায় সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম।

কক্সবাজার  র‌্যাব-১৫ এর সদর দপ্তরে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তার তিন ব্যক্তি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানান, তাঁরা জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’ এর সদস্য। আফগানিস্তানে তালেবানের উত্থানে উদ্বুদ্ধ হয়ে আনসার আল ইসলামে যোগদান করেন তাঁরা। আনসার আল ইসলাম মতাদর্শী ‘আস-শাহাদাত' নামে সংগঠন তৈরি করে নতুন সদস্য সংগ্রহসহ দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন এই ব্যক্তিরা। 

র‌্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘আস শাহাদাত’ সংগঠনটি পরিচালনা করে আসছেন সালাহউদ্দিন নামের এক ব্যক্তি। তিনি এখন বিদেশে অবস্থান করছেন। আসামিরা আনসার আল ইসলামের নাম ব্যবহার না করে ‘শাহাদাত’ নামে সদস্য সংগ্রহ ও দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। 

এই গ্রুপটি পার্শ্ববর্তী একটি দেশ হতে পরিচালিত হচ্ছে এবং এই সংগঠনের সদস্য সংখ্যা আনুমানিক ৮৫-১০০ জন। এই গ্রুপটির উদ্ভাবক হচ্ছে পার্শ্ববর্তী দেশের নাগরিক হাবিবুল্লাহ এবং কথিত আমির সালাহউদ্দিন। এছাড়াও তারা বাংলাদেশকে এই সংগঠনের একটি শাখা বলে দাবী করে। এই গ্রুপটির বাংলাদেশের আঞ্চলিক শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত আমির ছিলেন র‌্যাব কর্তৃক পূর্বে গ্রেফতারকৃত ইসমাইল হোসেন। 

এই গ্রুপের অন্যান্য সদস্যরা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করছে। তারা বিভিন্ন সময় অনলাইনে বিভিন্ন উগ্রবাদী নেতাদের বক্তব্য দেখে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে সংগঠনের সদস্যদের মাধ্যমে উক্ত সংগঠনে যোগদান করে এবং বিভিন্ন এলাকাকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য নির্ধারণ করেছেন বলে জানা যায়।

র‌্যাব বলছে, যেহেতু কিছু সংখ্যক সদস্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেফতার হয়েছে, তাই এই সংগঠনটিকে তারা পুনরুজ্জীবিত করতে নতুন রিক্রুটিং করছে। উঠতি বয়সী কিশোরদের অপব্যাখা দিয়ে সহজে ব্রেন ওয়াশের মাধ্যমে ভূলপথে নেয়া যায় বিধায় কোমলমতি কিশোরদের তারা প্রথমে টার্গেট করতো। তাই এই সংগঠনের বেশিরভাগ সদস্যই ১৯-২০ বছর বয়সী তরুণ এবং মাদ্রাসার ছাত্র ও শিক্ষক। সাধারণ লেখাপড়ায় শিক্ষিত উগ্র মনোভাবাপন্ন লোকজনকে আকৃষ্ট করার জন্য দেশ বিরোধিতাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতো। এ সংগঠনে মাদ্রাসা শিক্ষক সদস্যগণ অত্যন্ত সু-কৌশলে মাদ্রাসা পড়ুয়া কোমলমতি ছাত্রদের এ বিষয়ে অনুপ্রাণিত করতো। এ জন্য তারা সংগঠনের সদস্যদের গোপনে শারীরিক প্রশিক্ষণ প্রদান করতো বলে জানা যায়। তারা বিভিন্ন দেশের সমমনা ব্যক্তিদের সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিয়মিত যোগাযোগ বজায় রাখতো এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন উগ্রবাদী গ্রুপে তাদের বিচরণ ছিল বলে জানা যায়। 

মন্তব্য করুন